ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: ইসরায়েলি ট্যাংক গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকছে এমন খবর আসার প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ বলছে, প্রায় সাড়ে চার লাখ ফিলিস্তিনি গত এক সপ্তাহে রাফাহ ছেড়ে পালিয়েছে। “মানুষ ক্রমাগত ক্লান্তি, ক্ষুধা আর ভয়ের মধ্যে রয়েছে,” ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের দপ্তর ইউএনআরডব্লিওএ সতর্ক করে দিয়েছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা শহরের পূর্বাঞ্চলে ‘সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে অভিযান’ অব্যাহত রেখেছে, যেখানে দশ লাখেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলের অভিযানের কারণে আরও এক লাখের মতো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
ইসরায়েলের সৈন্যরা আবারো জেইতুন ও জাবালিয়াতে ফিরেছে, যেখানে দেশটির সেনাবাহিনীর দাবি অনুযায়ী হামাস পুনরায় সংগঠিত হয়েছে। পাঁচ মাস আগেই ইসরায়েল সেখানের হামাসের স্থানীয় ব্যাটালিয়নকে ধ্বংস করে দেয়ার দাবি করেছিলো।
সামরিক বাহিনী তাদের অভিযানের আগে বেসামরিক নাগরিকদের পূর্ব রাফাহ ও জাবালিয়া খালি করতে বলেছে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা প্রায় গাজার ২৩ লাখ মানুষের এক চতুর্থাংশের কাছাকাছি পৗেঁছেছে।
গত সাতই অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে পাল্টা সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। হামাসের ওই হামলায় বারশ মানুষের মৃত্যু হয়েছিলো এবং আরও ২৫২জনকে জিম্মি করা হয়েছিলো। এরপর থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ৩৫১৭০ জন নিহত হয়েছে এবং এর মধ্যে গত চব্বিশ ঘণ্টায় ৮২ জন মারা গেছে বলে জানিয়েছে গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে রাফাহ ক্রসিং নিয়ে ইসরায়েল ও মিশর পরস্পরকে দোষারোপ করেছে । ইসরায়েলের সেনারা ওই ক্রসিংয়ের গাজা অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ইউএনআরডব্লিওএ রাফাহ শহরের খালি রাস্তাঘাটের কিছু ছবি পোস্ট করেছে, যেগুলো ছয়ই মে ইসরায়েলের অভিযানের আগে তাঁবু ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে ভর্তি ছিলো।
পরিবারগুলো নিরাপত্তার খোঁজে পালিয়েছে, বলেছে সংস্থাটি। “কোন জায়গাই আর নিরাপদ নয়। দ্রুত যুদ্ধবিরতিই একমাত্র আশা”।
রাফাহ শহরে থাকা ইউএনআরডব্লিওএ মুখপাত্র লুইস ওয়াটারিজ সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, এখনো যেসব পরিবার শহরে আছে তারা ‘যত দ্রুত সম্ভব পশ্চিম দিকে সরে যাচ্ছে’ এবং ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলের দিকে সমুদ্র সৈকতে তাঁবু গাড়ছে।
হাদিল রাদওয়ান একজন বাস্তু হারানো নারী ও নবজাতক শিশুর মা। তিনি পশ্চিমাঞ্চলীয় তাল আল-সুলতান এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। তিনি বলেন অবিরাম গোলার শব্দে তিনি ভীতসন্ত্রস্ত এবং পানি ও অন্য দরকারি জিনিসের তীব্র সংকটে ভুগছেন। বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন তাদের সাথে থাকা অন্য অধিবাসীরা পালিয়ে গেছে। “আমার সিজার হয়েছে এবং হুমকির মুখে দ্রুত সরে যাওয়া আমার জন্য কঠিন”।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে কয়েকজন ফিলিস্তিনি বলেছেন, ইসরায়েলি ট্যাংকগুলো রাফাহর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আবাসিক এলাকার ভেতরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং মিশরের সাথে রাফাহ ক্রসিংয়ের কাছে প্রধান উত্তর দক্ষিণ সড়ক অতিক্রম করেছে। মঙ্গলবার ওই ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা।
“আজ সকালে ট্যাংকগুলো সালাহ আল-দিন সড়কের পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে,” একজন অধিবাসী বলছিলেন। (বিবিসি)
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com