ঢাকা      শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২
শিরোনাম

বাংলাদেশের দুই ব্যক্তির সংস্থাকে যুক্তরাষ্ট্রের ২৯ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প দেওয়ার তথ্য ‘সত্য’ নয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

IMG
04 March 2025, 10:19 AM

ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: বাংলাদেশে দুই ব্যক্তির অপরিচিত এক প্রতিষ্ঠানকে মার্কিন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) ২৯ মিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৩৬৫ কোটি টাকা) প্রকল্প দেওয়ার যে দাবি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প করেছেন, সেটি ‘সত্য’ নয় বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়। মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে অনুসন্ধান করেছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২১ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে দুজন ব্যক্তির এক সংস্থা ২৯ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে, যেটির নাম আগে কেউ শোনেনি।’

পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারি মেরিল্যান্ডে আরেক অনুষ্ঠানেও ট্রাম্প বলেন, ‘বাংলাদেশেরাজনৈতিক পরিসর শক্তিশালী করতে ২৯ মিলিয়ন ডলার গেছে, যাতে তারা একজন কট্টর বাম কমিউনিস্টকে ভোট দিতে পারে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘‘বাংলাদেশে ইউএসএআইডির অর্থায়নে ২৯ মিলিয়ন ডলারের ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে।’

‘সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ প্রকল্প নিয়ে কিছু তথ্য দিয়েছেন, যা নিয়ে জনমনে ব্যাপক বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুসন্ধান করেছে।’’

অনুসন্ধানের ফল হিসেবে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ইউএসএআইডি যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালকে (ডিআই) নির্বাচিত করে। প্রকল্প প্রস্তাবনা আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে এবং একটি স্বচ্ছ প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়া অনুসরণের মধ্য দিয়ে ইউএসএআইডি সিদ্ধান্তটি নেয়। ২০১৭ সালের মার্চে চুক্তি স্বাক্ষরের পর ডিআই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু করে। পরে প্রকল্পটির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয় এবং এর অর্থ আসে ধাপে ধাপে।’’

প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘শুরুতে এসপিএল প্রকল্পটি ছিল ৫ বছর মেয়াদি এবং বাজেট ছিল ১৪ মিলিয়ন ডলার। প্রকল্পটির ব্যবস্থাপনায় ছিল ইউএসএআইডি এবং অর্থায়নে ছিল ইউএসএআইডি ও যুক্তরাজ্যের উন্নয়ন সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান ডিএফআইডি (বর্তমানে এফসিডিও)। এই প্রকল্পে ডিএফআইডির অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি ছিল ১০ মিলিয়ন ডলার।’’

‘‘এসপিএল প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাস করে শান্তি ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান তৈরি, দলগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, দলগুলোর অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চার উন্নয়ন এবং প্রতিনিধিত্বমূলক নেতৃত্বের বিকাশে উৎসাহ দেওয়া। প্রকল্পের অধীনে ডিআই বাংলাদেশে জরিপ কার্যক্রমও পরিচালনা করে।’’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘‘ইউএসএআইডির প্রকল্পের ক্ষেত্রে মার্কিন সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা নীতি অনুসরণ করাটা বাধ্যতামূলক। এতে আর্থিক নিরীক্ষার প্রক্রিয়াটি কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়। প্রকল্প শেষ হয়ে যাওয়ার কয়েক বছর পরও এ-সংক্রান্ত নথিপত্র সংরক্ষণ করা হয়। প্রয়োজনে পুনর্নিরীক্ষা করা হয়।’’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘‘অনুসন্ধান থেকে দেখা যায় যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশে এসপিএল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু করে। তাই এটি বাংলাদেশের দুজন ব্যক্তির মালিকানাধীন কোনো সংস্থাকে প্রদান করার অভিযোগটি সত্য নয়।’’

বস্তুত এ ধরনের প্রকল্প বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগিতা চুক্তির (ডিওএজি–ডেভেলপমেন্ট অবজেকটিভ অ্যাসিস্ট্যান্টস অ্যাগ্রিমেন্ট) মাধ্যমে বাস্তবায়িত হওয়ার কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘এক্ষেত্রে ব্যক্তিবিশেষের কোনো কিছু করার ক্ষমতা থাকে না।’’

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

এ বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন