ঢাকা      শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২
শিরোনাম

১০ দিনে চার বার ভূকম্পন, বড় ভূমিকম্পের আভাস

IMG
08 March 2025, 12:00 PM

ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। উৎপত্তিস্থল ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকা। ঢাকা থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ৪৪৯ কিলোমিটার। উৎপত্তিস্থলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৬। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এ নিয়ে গত ১০ দিনে ৪ বার দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। প্রতিটি ভূমিকম্পের পর নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের আশপাশে ও দেশের ভেতরে ছোট বা মাঝারি আকারের ভূমিকম্প বেড়ে যাচ্ছে।

সিসমিক বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এসব ভূমিকম্প দেশের ভূতাত্ত্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কিত। তারা আরও বলেন, ভূমিকম্পের মাত্রা কম হলেও এর পরিণতি হতে পারে বড়, তাই নাগরিকদের সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণাকেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে এবং কাছাকাছি এলাকায় ২৮টি ভূমিকম্প হয়। ২০২৩ সালে এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪১টি এবং গত বছর ২০২৪ সালে দেশে ও আশপাশে ৫৩টি ভূমিকম্প হয়েছে। এটি ছিল আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

ভূতত্ত্ববিদরা বলছেন, সিলেট অঞ্চলে যে ‘ফল্ট’ রয়েছে, সেটি যে সক্রিয় আছে, বারবার এ রকম ছোট ছোট ভ‚মিকম্প সেই আভাসই দিচ্ছে। বাংলাদেশেও ভূ-অভ্যন্তরে ভূমিকম্পের শক্তি সঞ্চার হচ্ছে। তাই আমরা বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে আছি। এ দেশে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল সিলেট থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত, পার্বত্য অঞ্চলে বড় মাত্রার ভ‚মিকম্প একসময় হবে। বিশেষ করে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চল।

তবে ঢাকা থেকে ভ‚মিকম্পের উৎপত্তিস্থল ১০০ কিলোমিটার দূরে হলেও ঢাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হবে। ভূমিকম্পে ঢাকা শহর সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে আছে। ভূমিকম্পের জন্য যেসব উপাদান কাজ করে এর অন্যতম হলো অধিক জনসংখ্যা ও ঘনবসতি। ঢাকায় স্থানভেদে প্রতি কিলোমিটারে ২৫ থেকে ৫০ হাজার লোক বসবাস করে। নিম্নাঞ্চল ভরাট করে অপরিকল্পিত ও অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ণ ভূমিকম্পে কোনোভাবেই নিরাপদ নয়।

নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, একটি আদর্শ নগরে ২৫ শতাংশ খোলা জায়গা থাকে। ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগের পর নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে প্রয়োজনীয় খোলা জায়গা নেই ঢাকা শহরে। ঘনবসতির ঢাকা শহরটির ভূমিকম্প ঝুঁকি কমাতে এ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকল্প ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা বলা হলেও তার বেশিরভাগই আলোর মুখ দেখেনি। তা ছাড়া ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) মেনে চলার নির্দেশনা থাকলেও রাজধানীসহ অন্যান্য মহানগরীর বেশিরভাগ ভবন মালিকই তা মানেন না।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, জিপিএসে পরিমাণ করে দেখা গেছে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প হওয়ার শক্তি সঞ্চিত হয়ে আছে। যে কোনো সময় এ ভূমিকম্প হতে পারে। এই মাত্রার ভূমিকম্প হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ঢাকা নগরী। অপরিকল্পিত শহর এবং বিল্ডিং কোড মেনে অনেক স্থাপনা নির্মাণ না হওয়ায় এখানকার ১ শতাংশ বিল্ডিংও যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে দুই লাখ লোকের প্রাণহানি ঘটবে। ৫-৭ লাখ মানুষ বিভিন্ন বিল্ডিংয়ে আটকা পড়বে। পরবর্তী সময়ে খাদ্যাভাব, অগ্নিকাণ্ডসহ নানা কারণে তাদেরও একটি বড় অংশের মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন