ঢাকা      শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
শিরোনাম

গুমের ঘটনা নিয়ে একটি হরর মিউজিয়াম হওয়া উচিত: প্রধান উপদেষ্টা (ভিডিও)

IMG
04 June 2025, 5:08 PM

ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: কী ভয়াবহ একেকটি ঘটনা! আমাদের সমাজের ‘ভদ্রলোকেরা’ আমাদেরই আত্মীয়-পরিজনরা গুমের মতো ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে যা গা শিউরে ওঠার মতো ঘটনা - এসব কথা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আপনারা যা যা কিছু পেয়েছেন তার ভিত্তিতে একটি হরর মিউজিয়াম হওয়া উচিত। আজ বুধবার (৪ জুন) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে দ্বিতীয় ইন্টেরিম রিপোর্ট জমা দিয়েছে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন। পরে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গুমের ঘটনাগুলো গা শিউরে ওঠার মতো ঘটনা। এ ধরনের বন্দিশালা কেমন হয়, তিন ফিট বাই তিন ফিট খুপড়ির মধ্যে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস আটকে থাকার যে নির্মমতা, নিষ্ঠুরতার চিত্র মানুষের কাছে তুলে ধরা উচিত। প্রতিবেদনটি পাওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, প্রতিবেদনটি ওয়েবসাইট ও বই আকারে প্রকাশের ব্যবস্থা করতে হবে। এটি ঘিরে শুধু বাংলাদেশ নয়, বৈশ্বিকভাবেও আগ্রহ রয়েছে।

এসময় তিনি কমিশন সদস্যদের কাছে প্রতিবেদনের আশু করণীয়গুলো চিহ্নিত করে কোনটি কোন মন্ত্রণালয়ের আওতায় পড়ছে তা সুনির্দিষ্ট করে দেয়ার নির্দেশনা দেন, যাতে করে সরকার স্বল্প সময়ের মধ্যে কাজগুলো শুরু করতে পারে বলেও জানান তিনি। অতি দ্রুত যাতে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া যায়, সে বিষয়ে করণীয় জানাতে কমিশনকে পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

কমিশন সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, আপনারা ভয়-ভীতি, নানা রকম হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করে কাজ করে যাচ্ছেন। এদেশের মানুষের জন্য আপনারা অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন। ভবিষ্যতে যারা মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করবে, আপনারা তাদের অনুপ্রেরণা।

গুম কমিশনের কাছে ১ হাজার ৮৫০টি অভিযোগ জমা পড়েছে যার মধ্যে ১ হাজার ৩৫০টি যাচাই শেষ হয়েছে। গুম হওয়া তিন শতাধিক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। কেউ ৭ বছর নিখোঁজ থাকলে মৃত বলে ধরে নেয়ার বিধান পরিবর্তন করে ৫ বছর করার সুপারিশ করা হয়েছে বলেও জানান গুম সংক্রান্ত কমিশনের সভাপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী।

নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবার যাতে অন্তত ব‍্যাংক হিসেবে লেনদেন করতে পারে, সে বিষয়ে উদ্যোগ নিতে প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান কমিশন প্রধান। তিনি আরও বলেন, বিদ্যমান আইনে কেউ সাত বছর নিখোঁজ থাকলে তাকে মৃত বলে ধরে নেয়ার সুযোগ রয়েছে, আইন সংশোধন করে এটিকে পাঁচ বছর করার সুপারিশ করা হয়েছে।

আজ সকাল ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশন প্রধান বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেন। সদস্যদের মধ্যে নূর খান, সাজ্জাদ হোসেন এবং নাবিলা ইদ্রিস এসময় উপস্থিত ছিলেন। শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া এতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

একজন কমিশন সদস্য প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, ঘটনাগুলো এতটাই ভয়াবহ যে, জড়িত অনেক কর্মকর্তা ও অন্যান্যরাও অনুশোচনায় ভোগেন। তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আত্মশুদ্ধির একটা প্রচেষ্টা হিসেবে। দু‘জন অফিসার লিখিতভাবে এর থেকে পরিত্রাণ চেয়ে চিঠিও লিখেছিলেন। চিঠিগুলো গণভবনে পাওয়া গেছে। তৎকালীন সেনাপ্রধান জনসম্মুখে এ চিঠির কথা স্বীকারও করেছেন।

কমিশন সদস‍্যরা জানান, কমিশনের কাছে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৫০টি অভিযোগ এসেছে এবং এর মধ্যে ১ হাজার ৩৫০টি অভিযোগ যাচাই বাছাই শেষ হয়েছে। কমিশন সদস‍্যরা আরও জানান, অভিযোগের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। গুমের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে এখনও তিন শতাধিক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন বলেও জানান তারা।

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

এ বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন