ঢাকা      শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২
শিরোনাম

দুর্ভিক্ষের আলামত দেখতে পাচ্ছি: রুহুল কবির রিজভী

IMG
11 July 2025, 3:12 PM

ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: দেশে অর্থনীতির করুণ অবস্থা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘এটা শুধু মুখের কথা নয় যে, সামনে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে দেশে দুর্ভিক্ষ হয় কিনা, এটা এখন মানুষের মনে মনে। দুর্ভিক্ষের আলামত যদি আমরা দেখতে পাই, শুনতে পাই, তাহলে তো জনগণ আমাদের ছেড়ে দেবে না। আজ শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

জিয়া পরিষদের উদ্যোগে সংগঠনের সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল কুদ্দুসের রোগ মুক্তি কামনায় আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে দুঃস্থদের মাঝে জায়নামাজ বিতরণ করা হয়।

বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে বৃহত্তর আদর্শের জন্য লড়াই করছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘আমরা বৃহত্তর আদর্শের জন্য লড়াই করছি। আমরা মানবিক, সাম্য, ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করছি। আমরা আইনের শাসনের জন্য লড়াই করছি। যার জন্য দরকার চিরায়ত গণতন্ত্র, প্রকৃত গণতন্ত্র, খাঁটি গণতন্ত্র। এটা বৃহত্তর আদর্শের লড়াই, যেখানে জনগণের মালিকানা জনগণ ফিরে পাবে। সেই মালিকানা আটকে রাখা তো বড় ধরনের ফ্যাসিবাদকে প্রশ্রয় দেওয়া।

তিনি বলেন, জনগণের সরকার ক্ষমতায় থাকলে প্রতিটি পদে পদে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। সেই জবাবদিহি এখন নেই। অন্তর্বর্তী সরকারকেও আমরা মনে করি জনসমর্থিত। কারণ সব রাজনৈতিক দল শুধু আওয়ামী লীগ আর তাদের কয়েকটি দোসর ছাড়া সবাই এই সরকারকে সমর্থন করেছে। ড. ইউনূস সাহেবকে আমরা সবাই সমর্থন করে যাচ্ছি। কিন্তু এটাও তো ঠিক, দুর্ভিক্ষের আলামত যদি আমরা দেখতে পাই, শুনতে পাই; তাহলে তো জনগণ আমাদের ছেড়ে দেবে না।

তিনি বলেন, আজকে অসংখ্য গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, মানুষ কর্মহীন হচ্ছে। মানুষ যদি খাবার কিনতে না পারে, তাহলে কিন্তু দুর্ভিক্ষের আলামত তৈরি হবে এবং এই আলামত তৈরি হলে কেউ-ই কিন্তু রেহাই পাবে না। আর তখন হাততালি দেবে পতিত সরকারের দোসররা।

রিজভী বলেন, ‘যে আওয়ামী দোসসরা ব্যাংকের হাজার কোটি টাকা মেরে বিদেশে পাচার করেছে, তাদের সঙ্গে নামে মাত্র কিছু প্রতিষ্ঠান একই কাজ করেছে। সরকার ইচ্ছা করলে এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রশাসক নিয়োগ করে প্রতিষ্ঠানগুলো চালাতে পারে। গার্মেন্টসগুলো যাতে বন্ধ না হয়, সরকার এটাকে নানাভাবে টেকওভার করতে পারে। দোসররা টিকে থাকলে তাদের বিচার করুন।

অর্থনীতির অবস্থা করুণ উল্লেখ করে রিজভী বলেন, শ্রমিকদের কলকারখানা যেন বন্ধ না হয়; সেই ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ অর্থনীতির করুণ অবস্থা। তাই আর্থিক শৃঙ্খলা ফেরাতে হবে এটাও যেমন ঠিক, পাশাপাশি কর্মসংস্থান বৃদ্ধি না করলে জনগণের কাছে কেউ-ই রেহাই পাবেন না। জনগণ কিন্তু এটা ছেড়ে দেবে না। এই কথাগুলো ভাবুন, এই কথাগুলো চিন্তা করুন। শুধু শিশুদের মতো ওই চকলেট আমাকে পেতেই হবে, আমাকে ওই খেলনাটা দিতেই হবে, এই রকম গো ধরে থাকলে পার হবে না। এতে আমাদের গণতন্ত্রের জন্য সর্বনাশ ডেকে আনবে, প্রকৃত গণতন্ত্রের চর্চা মুখ থুবড়ে পড়বে এবং আমরা একটা দীর্ঘস্থায়ী অগণতান্ত্রিক শক্তির কাছে জিম্মি হয়ে পড়বো।

বিএনপি সংস্কারের পক্ষেই বলেছে জানিয়ে রিজভী বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে তো সংস্কার বিরোধী কোনো কথা বলা হয়নি। সংস্কারের পক্ষেই বলা হয়েছে। আপনারা যে সংস্কারের কথা বলছেন, বিএনপির ৩১ দফার মধ্যে প্রায় অনেক জিনিসই প্রতিফলিত হয়েছে। জুলাই সনদের অনেক বিষয় বিএনপি গ্রহণ করেছে। কিন্তু এটি মূলনীতির মধ্যে নিতে হবে কেন? যুগে যুগে দেশে দেশে আরও সংস্কার হবে। সংস্কার থাই পর্বতমালার মতো স্থির কোনো বিষয় নয়, সংস্কার একটি গতিশীল ব্যাপার। সমাজ এবং রাষ্ট্রে যখন যেটির প্রয়োজন হবে, গণতন্ত্রের স্বার্থে রাষ্ট্রের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে তখনই সংস্কার করে সেই আইন প্রণয়ন হবে। এটাই তো গণতান্ত্রিক সংবিধানের নিয়ম। কিন্তু এটাকে মূলনীতির মধ্যে নিতে হবে, আগে সংস্কার- এগুলো বলে তো বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। এতে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। কেন আপনারা জনগণকে এভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন?এটা না করে আমরা যেটি বলেছি জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফেরত দেন- এটাই সবচেয়ে বড় কাজ। এটাই তো ১৬ বছর ধরে শেখ হাসিনা বন্ধ করে রেখেছিলেন। দরজায় খিল দিয়ে রেখেছিলেন। সেই বন্ধ দরজা আমাদের এখন খুলতে হবে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন।

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন