ঢাকা      শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২
শিরোনাম

আমরা এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো: প্রশ্ন সোহাগের মেয়ের

IMG
12 July 2025, 3:50 PM

বরগুনা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: মিটফোর্ডে পাথর মেরে হত্যা করা ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে হারিয়ে তার পরিবার এখন নিঃস্ব। পরিবারের সবার চোখে অশ্রু, আর বুকভরা শূন্যতা। বাবার মৃত্যুতে সোহাগের ১৪ বছর বয়সী মেয়ে সোহানা দিশেহারা। করছে শুধু আর্তনাদ। কান্নাজড়িত কণ্ঠে সদ্য বাবাকে হারানো এই মেয়ে বলেন, ‘আমরা এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো?’

শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে সোহাগের লাশ নিয়ে বরগুনায় পৌঁছান তার স্বজনরা। পরে সদর উপজেলার ৭ নম্বর ঢলুয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকায় মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। স্থানীয়রা ভিড় করেন তার বাড়িতে।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সোহাগের বয়স যখন মাত্র ৭ মাস; তখন বজ্রপাতে মৃত্যু হয় তার বাবা আইউব আলীর। এরপর তার মা আলেয়া বেগম তিন সন্তানকে নিয়ে জীবিকার তাগিদে ঢাকা চলে যান। ছোটবেলা থেকেই সংগ্রামের মধ্যে বেড়ে ওঠা সোহাগ পরে ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় ‘মেসার্স সোহানা মেটাল’ নামে একটি দোকান দেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ওই দোকান থেকেই জীবিকা নির্বাহ করছিলেন।

দোকান চালানোর সময় থেকেই একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী প্রতি মাসে দুই লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করে আসছিল। সোহাগ চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় শুরু হয় তাকে হুমকি দেওয়া। একপর্যায়ে দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপরও তিনি মাথা নত না করে নিজের অবস্থানে অটল থাকেন।

গত বুধবার বিকালে সোহাগকে তার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায় একদল যুবক। দাবি করা হয় চাঁদার টাকা। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আটকে রেখে শুরু হয় শারীরিক নির্যাতন। একপর্যায়ে নির্মমভাবে পাথর মেরে হত্যা করা হয় তাকে।

স্থানীয়রা জানান, সোহাগ ছিল একজন মেহনতী, নম্র, ভদ্র ও পরিশ্রমী মানুষ। কখনো কারো সঙ্গে বিরোধে জড়াননি। তার একমাত্র অপরাধ ছিল, তিনি চাঁদা দিতে রাজি হননি।

নিহত সোহাগের বড় বোন ফাতেমা বলেন, ‘আমার ভাই গত ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে ব্যবসা করে আসছিল। সেই ব্যবসা নিয়েই হিংসা, প্রতিহিংসা সবকিছু। ওরা দোকানটা দখল করতে চেয়েছিল। টাকা না দিলে তারা মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছিল বহুদিন ধরে। শেষ পর্যন্ত ওকে পাথর মেরে খুন করা হলো।’

সোহাগের স্ত্রী লাকি বেগম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই আমার স্বামীর দোকান থেকে চাঁদা দাবি করে আসছিল কয়েকজন। আমার স্বামী রাজি হননি। তারা সহ্য করতে পারছিল না যে, চাঁদা না দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এ কারণেই তারা আমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। তারা শুধু হত্যা করেই শান্ত হয়নি। মৃত্যুর পরে তার নিথর দেহের উপরে পাথর দিয়েও অনেক আঘাত করেছে। আমি এ নরপশুদের বিচার চাই।’

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

এ বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন