ঢাকা      রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২
শিরোনাম

গাজায় হাজার হাজার ভবন গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইসরাইল

IMG
20 July 2025, 11:25 AM

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: মার্চে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি প্রত্যাহার করার পর থেকে গাজাজুড়ে হাজার হাজার ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরাইল। বিগত কয়েক সপ্তাহে পুরো শহর ও আশেপাশের এলাকা ধ্বংস করে মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে, যেখানে আগে হাজার হাজার মানুষ বসবাস করতো। স্যাটেলাইট ছবিতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র দেখা যাচ্ছে, যেসব এলাকা ইসরাইলি সেনাবাহিনী “অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণে” রয়েছে বলে দাবি করেছে। এই ধ্বংসযজ্ঞের বড় একটি অংশ পরিকল্পিতভাবে পরিচালিত করা হয়েছে। সেসব জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবন এবং অনেক ক্ষেত্রেই অক্ষত ভবন পর্যন্ত গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

যাচাই করা ভিডিওতে দেখা যায়, টাওয়ার ব্লক, স্কুল ও অন্যান্য স্থাপনার ওপর ইসরাইলি বাহিনীর চালানো নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণে ধুলো ও ধ্বংসাবশেষের বিশাল মেঘ ছড়িয়ে পড়ছে। বিবিসিকে একাধিক আইন বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, ইসরাইল সম্ভবত জেনেভা কনভেনশনের অধীনে যুদ্ধাপরাধ করেছে, কারণ দখলদার শক্তির মাধ্যমে অবকাঠামো ধ্বংস করাকে সেখানে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)-এর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী কাজ করছে। তিনি বলছেন, হামাস বেসামরিক এলাকায় 'সামরিক সরঞ্জাম' লুকিয়ে রেখেছে এবং “শুধুমাত্র সামরিক প্রয়োজনেই সম্পদ ধ্বংস করা হয়”।

জুলাই মাসে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ রাফাহ শহরের ধ্বংসাবশেষের ওপর একটি তথাকথিত “মানবিক শহর” গড়ে তোলার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন, যেখানে প্রাথমিকভাবে ৬ লাখ ফিলিস্তিনিকে আবদ্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। সে পরিকল্পনাটি ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে। সাবেক ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট বলেছেন, এই প্রস্তাব "একটি বন্দি শিবির হিসেবে ব্যাখ্যা করা হতে পারে।"

তেল আল-সুলতান ছিল রাফাহ শহরের সবচেয়ে প্রাণবন্ত এলাকা। ঘনবসতিপূর্ণ এই এলাকায় ছিল রাফাহর একমাত্র বিশেষায়িত মাতৃসদন হাসপাতাল এবং অনাথ ও পরিত্যক্ত শিশুদের জন্য একটি সেবা কেন্দ্র। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, এই এলাকাটি আগেই ইসরাইলি বোমা ও গোলাবর্ষণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তবে তখনো ডজনখানেক ভবন ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল।

কিন্তু ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে ধ্বংসযজ্ঞ আরও বেড়ে যায়, যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোর ধ্বংসাবশেষও সরিয়ে গোটা ব্লক মাটির সাথে মিশিয়ে ফেলা হয়। হাতে গোনা কয়েকটি স্থাপনার একটি হিসেবে শুধু হাসপাতালটি রয়ে গেছে। এছাড়া পাশের সৌদি পাড়ায়ও এখন ধ্বংসের কাজ চলছে – যেখানে একসময় শহরের সবচেয়ে বড় মসজিদ ও বেশ কয়েকটি স্কুল ছিল। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, রাফাহ শহরের এক রাস্তায় একটি ট্যাংক চলছে এবং পাশেই একটি ভেকু কাজ করছে।

ইসরাইলি ধ্বংসযজ্ঞের দৃশ্য গাজার অন্য অংশগুলোতেও দেখা গেছে, যেসব জায়গায় আগের বোমাবর্ষণেও তেমন ক্ষতি হয়নি। খুজাহ নামের কৃষিভিত্তিক জনপদ ইসরাইল সীমান্ত থেকে প্রায় ১.৫ কিলোমিটার (০.৯ মাইল) দূরে অবস্থিত। যুদ্ধের আগে এই শহরের জনসংখ্যা ছিল ১১,০০০ এবং এর উর্বর কৃষি জমি টমেটো, গম ও জলপাইয়ের জন্য পরিচিত ছিল।

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

এ বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন