ঢাকা      শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
শিরোনাম

বিহারে মোদি-নীতীশ জোটের ‘রেকর্ড’ জয়, বিরোধীদের ভরাডুবি

IMG
15 November 2025, 12:17 PM

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: সিংহভাগ বুথ ফেরত সমীক্ষাই এনডিএ'র জয়ের পক্ষে হাওয়া তুলেছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দেখা গেল, একটিমাত্র এক্সিট পোলেরই বিপুল জয় হয়েছে। সেই সংস্থার নাম, পোল ডায়েরি। তাদের পরিচয়? সেভাবে কেউ জানেই না। একমাত্র তারা বুথ ফেরত সমীক্ষায় বলেছিল, ভারতের বিহারে বিজেপি জোট ২০০ পেরিয়ে যেতে পারে। হুবহু মিলে গেছে। ভোট চুরি, এসআইআর, কাস্ট সেন্সাস, বেকারত্ব, পরিযায়ী শ্রমিক—বিহার নির্বাচনে বিজেপি-জেডিইউ জোটের বিরুদ্ধে বিরোধীদের এই তাবৎ প্রচার ধুলিসাৎ।

লোকসভা ভোটের বিপর্যয়ের পর থেকে বিজেপির অবিশ্বাস্য জয়যাত্রা অব্যাহত। মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, দিল্লির মডেলে এবার বিহারেও বিপুল জয় ছিনিয়ে নিলো এনডিএ। তাদের স্লোগান ছিল, ‘পচ্চিস সে তিস/ফির সে মোদি-নীতীশ’। তাই হতে চলেছে। জয়ের মাত্রা এমনই যে, তেজস্বী যাদবকেও রাঘোপুরে প্রায় হারিয়ে দিচ্ছিলেন বিজেপি প্রার্থী। শেষ পর্বে এসে তেজস্বী জয়ের মুখ দেখেন।

তাৎপর্যপূর্ণ হলো, বিজেপি জোটের প্রতিটি শরিকের ৯০ শতাংশের বেশি স্ট্রাইক রেট। অর্থাৎ যে যত আসনে লড়াই করেছে, সেই আসনের খুব কাছে গিয়ে থেমেছে। চমকপ্রদ উত্থান হলো চিরাগ পাসোয়ানের। ২৮ আসনে লড়াই করে ১৯টিতে জয়।

আর ঠিক বিপরীত ফল সরকার বিরোধীদের। ১৪৩ আসনে লড়াই করে আরজেডি ৩০ পেরোতে পারেনি। বহু দর কষাকষি করে ৬১ আসনে প্রার্থী দিয়ে রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস পেয়েছে ৬টি। অথচ এই জোট ৩৮ শতাংশ ভোট পেয়েছে।

এনডিএ'র জয়ের প্রাথমিক বিশ্লেষণ হলো, বিহারে জাতপাতের ভিত্তিতে ভোটই হয়নি। কারণ, উচ্চবর্ণ, দলিত, মহাদলিত, ওবিসি, ইবিসি, এমনকি মুসলমানদের একাংশ এনডিএ'কে ঢেলে ভোট না দিলে এই জয় অসম্ভব। আর মুসলিম-যাদব কম্বিনেশন পূর্ণাঙ্গ ভোট দিলে আরজেডি'র এত খারাপ ফল হওয়ার কথাই নয়। ওই ভোট কোথায় গেল? মুসলিম ভোটের একটা বড় অংশ তেজস্বীর থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দল। সুবিধা হয়েছে বিজেপির।

এই জয় কি ডাবল ইঞ্জিনের? নাকি নীতীশের সুশাসন এবং মহিলা ভোটের সমন্বয়? একক বৃহত্তম দল বিজেপি হলেও বেশি সাফল্য নীতীশের। কারণ, ২০২০ সালের তুলনায় তিনি এবার জয়ী দ্বিগুণ আসনে। ২০০৫ থেকে শুরু হওয়া নীতীশ ম্যাজিক এবারও শুধু অব্যাহত নয়, সব রেকর্ড ভেঙে ২০ বছর পরও সরকারের প্রতি আস্থা জ্ঞাপনের যথাযথ বিজ্ঞাপন। অর্থাৎ প্রো ইনকামবেন্সি।

এছাড়া এবার সবচেয়ে বড় ফারাক গড়ে দিয়েছে শাসক ও বিরোধী—দুই জোটের আসন সমঝোতা। বিজেপি জোটের আসন ভাগাভাগি ছিল নিখুঁত। বিরোধীদের আসন সমঝোতায় ছিল বিবাদের প্রকাশ্য ছাপ।

তিনি অসুস্থ, তার ভোটব্যাংক নেই, তিনি ক্ষুব্ধ, তার দল ভেঙে যাবে, বিজেপি তাকে আর মুখ্যমন্ত্রী করবে না—এসব হাজারো জল্পনা উড়িয়ে প্রচার পর্বে প্রায় পুরোটাই নীরব থেকে নীতীশ আবার ঘুরে দাঁড়ালেন। স্বমহিমায়।

আর নরেন্দ্র মোদি? তিনি ভোট চোর, এই অভিযোগ তুলেও কোনও ক্ষতি করতে পারেননি রাহুল গান্ধী। কেন্দ্রে মোদি এবং রাজ্যে নীতীশ। এই কম্বিনেশন ম্যাজিক দেখিয়েছে বিহারের ভোটে।

এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, ইন্ডিয়া জোটের ভবিষ্যৎ কী? এই ভোট থেকে অন্যতম শিক্ষা কী? ভোট স্ট্র্যাটেজিস্ট হওয়া এবং নিজে ভোটের ময়দানে লড়াই করার মধ্যে আকাশ-পাতাল ফারাক। প্রশান্ত কিশোরের দল একটিও আসন পায়নি।

ব্রেকিং নিউজ, এই মুহূর্তের খবর, প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর, লেটেস্ট নিউজ এবং গুরুত্বপূর্ণ আপডেট নিউজ পেতে ভিজিট করুন www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন