ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে নয়জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলছেন, এটা বছরের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হামলা।
মৃতদের মধ্যে জেনিনের ফ্ল্যাশপয়েন্ট শহরে ৬১ বছর বয়সী একজন মহিলার কথা জানা গেছে। খবর বিবিসির।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তাদের সৈন্যরা ‘বড় হামলার’ পরিকল্পনাকারী ইসলামিক জিহাদ ‘সন্ত্রাসী অপারেটিভস’ কে গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিল।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্সি ইসরায়েলকে গণহত্যার জন্য অভিযুক্ত করেছেন। পরে ঘোষণা করেন, তারা নিরাপত্তা বিষয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে সমন্বয় করেছেন।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জেরুজালেমের নিকটবর্তী আল-রাম শহরে ইসরায়েলি সৈন্যদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় একজন ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করা হয়, কারণ ওই শহরের বাসিন্দারা জেনিন অভিযানের প্রতিবাদ করেছিলেন।
ইসরায়েলে ‘দুটি রকেট ছোড়ার’ পর তারা গাজায় ফিলিস্তিনি সংগ্রামীদের (মিলিট্যান্ট) ওপর রাতভর বিমান হামলা চালিয়েছে। গাজার কোনো গোষ্ঠী রকেটের দায় স্বীকার করেনি। উভয়ই রকেটই ইসরায়েলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা আটকানো হয়েছিল।
গাজায় বোমা হামলার মাত্রা এখনও স্পষ্ট নয়, যদিও বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, উভয় পক্ষে কোনো আহতের খবর পাওয়া যায়নি।
বৃহস্পতিবার সকালে তিন ঘণ্টা ধরে ফিলিস্তিনি ‘সংগ্রামী’ ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে প্রচণ্ড যুদ্ধ চলার কারণে জনাকীর্ণ জেনিন শরণার্থী শিবির জুড়ে ভারী বন্দুকযুদ্ধ এবং বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিহতদের মধ্যে মাগদা ওবায়েদ (৬১), সায়েব ইজরিকি (২৪) এবং ইজিদিন সালাহাত (২৬) নামে তিনজনকে শনাক্ত করেছে। বিশ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর।
ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) বলছে, তাদের সৈন্যরা জেনিনে প্রবেশ করেছে একটি ইসলামিক জিহাদ ‘সন্ত্রাসী স্কোয়াড’কে গ্রেপ্তার করতে, যারা ‘ইসরায়েলি বেসামরিক এবং সৈন্যদের ওপর একাধিক বড় হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে ব্যাপকভাবে জড়িত’ বলে অভিযোগ রয়েছে।
আইডিএফ বলছে, বাহিনী একটি বিল্ডিংকে ঘিরে রাখে এবং তিনজন সশস্ত্র সন্দেহভাজন গুলি চালানোর পরে নিষ্ক্রীয় হয়েছে এবং চতুর্থ সন্দেহভাজন আত্মসমর্পণ করেছে। আইডিএফ দাবি করছে, তাদের সৈন্যদের ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীরা গুলি করেছে এবং তারা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে পাল্টা গুলি করে।
ইসলামিক জিহাদ এবং হামাস বলেছে যে তাদের যোদ্ধারা সেনাদের লক্ষ্যবস্তুতে গুলি ও ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস দিয়ে হামলা চালিয়েছে।
আইডিএফ বলেছে, বাড়িটিকে ইসলামিক জিহাদ সেল একটি আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করছে। যেখানে ভিতরের আসবাবপত্রে আগুন লেগেছে এবং এখনও ধোঁয়া উঠছে।
নিচতলায় বাইরের দেয়ালগুলি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। একটি বাথরুমের কল এবং সিঙ্ক উন্মুক্ত রাখা ছিল। উপরের তলায় বুলেটের ছিদ্র ছিল, সিঁড়িতে রক্তের জমে ছিল।
পাশের বাড়ির আয়েশা আবু আল-নাজ (৭৩) বিবিসিকে বলেছেন, অভিযানের সময় তার বাড়ি কেঁপে ওঠে এবং তিনি ও তার পরিবার জীবন নিয়ে ভয় পেয়েছিলেন।
‘আমরা ভয় পেয়েছিলাম। আমি সেনাবাহিনীকে দেখেছি এবং তারপর আমি জানালা খুলতে বা দেখতে পারিনি। এটি একটি ভীতিকর পরিস্থিতি ছিল,’ তিনি বলেন।
‘আমাদের বিল্ডিংয়ের পাশে কিছু তরুণ ফিলিস্তিনি ছিল যারা তখন এসে এটিকে ঘিরে ফেলে। তারা তাদের লক্ষ্য করে গুলি করে। এবং তারপরে সেখানে অনেক লোক নিহত হয়।’ যোগ করেন আয়েশা আবু আল-নাজ।
মাগদা ওবায়েদের মেয়ে বলেছেন যে তার মা-ও টার্গেট করা বাড়ির কাছেই থাকতেন এবং কী ঘটছে তা দেখার জন্য তিনি জানালা দিয়ে উঁকি দেওয়ার সময় তার ঘাড়ে গুলি করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ গ্লোবাল/এইচএম
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com