ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: শাবানের ১৫ তারিখের রাত গুরুত্বপূর্ণ রাতগুলোর একটি। এই রাতে আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের ক্ষমা করেন। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেশবে বরাতের ইবাদত-বন্দেগি
ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: আজকের রাতটি মুসলমানদের কাছে শবে বরাত বা লাইলাতুল বরাত হিসেবে পরিচিত। হিজরি সনের অষ্টম মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত এটি। সে হিসেবে আজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শবে বরাত। মুমিনগণ এ রাতকে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ মনে করেন। তাই এ রাতে তারা ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকেন।
রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ রাতে অনেক ইবাদত-বন্দেগি করতেন। তবে এ রাতের নির্দিষ্ট কোনো ইবাদত নেই। বিশ্বনবি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কিছু আমল বিশেষ ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়। সে আলোকে এ রাতের কিছু আমল তুলে ধরা হলো-
নফল নামাজ পড়া
এ রাতে দীর্ঘ (কেরাতে) তেলাওয়াতে নফল নামাজ পড়া। অর্ধ শাবানের রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেশি বেশি নফল নামাজ পড়তেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, এক রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘুম থেকে উঠে নামাজে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং সেই নামাজে এতো দীর্ঘ সময় তিনি সেজদায় ছিলেন যে, আমার সন্দেহ হচ্ছিল তিনি ইন্তেকাল করেছেন কি না। আমি উঠে গিয়ে তার বৃদ্ধাঙুলি নাড়া দিলাম। আঙুলটি নড়ে উঠল। আমি নিশ্চিত হলাম তিনি বেঁচে আছেন। এরপর আমি আপন স্থানে ফিরে এলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেজদা থেকে মাথা উঠালেন এবং নামাজ শেষ করে এক পর্যায়ে বললেন, হে আয়েশা! তুমি কি ভেবেছ যে, আল্লাহর নবী তোমার উপর কোনো অবিচার করেছে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি এমন কিছুই ভাবিনি। আমি বরং আপনাকে দীর্ঘ সময় সেজদায় দেখে ভয় পাচ্ছিলাম যে, আপনাকে আল্লাহ পাক উঠিয়ে নিলেন কি না! রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি কি জানো আজকের রাতটি কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তার রাসুলই ভালো জানেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, রাতটি শাবানের পঞ্চদশ রজনী। এতে মহান প্রভু তার বান্দাদের উপর বিশেষ দৃষ্টি দেন। ক্ষমাপ্রার্থীদের ক্ষমা করে দেন। রহমতপ্রার্থীদের রহমত দান করেন। অপরদিকে পরশ্রীকাতর ব্যক্তিদের আপন অবস্থায় ছেড়ে দেন। (শুয়াবুল ঈমান, আত তারগীব)
বেশি বেশি দোয়া করা
এ রাতের দোয়া আল্লাহ তাআলা কবুল করেন। তাই বেশি বেশি দোয়া করা। হাদিসে এসেছে-
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, পাঁচটি রাত এমন আছে, যে রাতে বান্দার কোনো দোয়া ফেরত দেয়া হয় না। আর তা হলো-
- জুমআর রাতের দোয়া
- রজব মাসের প্রথম রাতের দোয়া
- অর্ধ শাবানের রাতের দোয়া
- রোজার ঈদের রাতের দোয়া
- কুরবানির ঈদের রাতের দোয়া। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক)
ইমাম শাফেঈ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমাদের কাছে পৌঁছেছে যে, পাঁচটি রাতে দোয়া বেশি বেশি কবুল করা হয়। জুমআর রাত, ঈদুল আজহার রাত, ঈদুল ফিতরের রাত, রজব মাসের প্রথম রাত এবং শাবানের ১৫তম রাতের দোয়া। (কিতাবুল উম্ম, আস-সুনানুল কুবরা)
আল্লাহর অনুগ্রহ লাভে দোয়া বেশি বেশি পড়া-
رَبِّ أَوْزِعْنِىٓ أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِىٓ أَنْعَمْتَ عَلَىَّ وَعَلٰى وٰلِدَىَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صٰلِحًا تَرْضٰىهُ وَأَدْخِلْنِى بِرَحْمَتِكَ فِى عِبَادِكَ الصّٰلِحِينَ
উচ্চারণ: রাব্বি আওঝি’নি আন আশকুরা নি’মাতাকাল্লাতি আনআমতা আলাইয়্যা ওয়া আলা ওয়ালিদাইয়্যা ওয়া আন আ’মালা সালেহাং তারদাহু ওয়া আদখিলনি বিরাহমাতিকা ফি ইবাদিকাস সালিহিন। (সুরা নামল: আয়াত ১৯)
اَللَّهُمَّ اِنِّى اَعُوْذُبِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَالْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَ ضَلَعِ الدَّيْنِ وَ غَلَبَةِ الرِّجَالِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি ওয়াল আজযি ওয়াল কাসালি, ওয়াল জুবনি ওয়াল বুখলি ওয়া দালায়িদ দাইনি ওয়া গালাবাতিল রিজালি। (বুখারি ও মুসলিম, মিশকাত)
اَللَّهُمَّ اِنِّى اَعُوْذُبِكَ مِنَ الْجُبْنِ وَاَعُوْذُبِكَ مِنَ الْبُخْلِ وَاَعُوْذُبِكَ مِن اَرْذَلِ الْعُمُرِ وَ اَعُوْذُبِكَ مِن فِتْنَةِ الدُّنْيَا وَ عَذَابِ الْقَبْرِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল জুবনি ওয়া আউজুবিকা মিনাল বুখলি ওয়া আউজুবিকা মিন আরজালিল উমুরি ওয়া আউজুবিকা মিন ফিতনাতিদ দুনিয়া ওয়া আজাবিল কাবরি। (বুখারি ও মিশকাত)
اَللَّهُمَّ اِنِّى اَعُوْذُبِكَ مِن جَهْدِ الْبَلَاءِ وَ دَرَكِ الشَّقَاءِ وَ سُوْءِ الْقَضَاءِ وَ شَمَاتَةِ الْأَعْدَاءِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন জাহদিল বালায়ি ওয়া দারাকিশ শাক্বায়ি ওয়া সুয়িল ক্বাজায়ি ওয়া শামাতাতিল আ’দায়ি।
اَللَّهُمَّ اكْفِنِىْ بِحَلَالِكَ عَنْ حَرَامِكَ وَأَغْنِنِىْ بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাকফিনি বিহালালিকা ওয়া হারামিকা ওয়া আয়িন্নি বিফাজলিকা আম্মান সেওয়াকা।
বেশি বেশি তওবাহ ও ইসতেগফার করা
বান্দার গোনাহ মাফে তাওবাহ করার বিকল্প নেই। বান্দা নিজের গোনাহের কথা স্মরণ করে আল্লাহর কাছে তা থেকে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করা। তবে আল্লাহ বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত ওসমান ইবনে আবিল আস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, শাবান মাসের ১৫তম রাতে আল্লাহ তাআলা এই বলে ডাকতে থাকেন, তোমাদের মাঝে কেউ কি আছে ক্ষমাপ্রার্থী? আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। আছে কি তোমাদের মাঝে কিছু চাইবার মতো কেউ? আমি তার সব চাহিদা পূরণ করে দেব। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, এভাবে সব প্রার্থনাকারীর সব ধরনের বৈধ চাওয়াগুলো পূরণ করা হয়। কিন্তু ব্যভিচারী ও মুশরিকদের প্রার্থনা কবুল করা হয় না। (শুয়াবুল ঈমান)
গোনাহ থেকে ফিরে আসতে তাওবাহ-ইসতেগফার পড়া-
اَسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِى لَا اِلَهَ اِلَّا هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْم
উচ্চারণ: আসতাগফিরুল্লাহাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুম।
اَللَّهُمَّ اِنِّى اَسْئَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِىْ دِيْنِى وَ دُنْيَاىَ وَ اَهْلِىْ وَ مَالِىْ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল আফিয়াতা ফি দ্বীনি ওয়া দুনিয়ায়া ওয়া আহলি ওয়া মালি। (আবু দাউদ, মিশকাত)
اَللَّهُمَّ اِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّىْ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নি।
اَللَّهُمَّ اِنِّى اَسْئَلُكَ الْهُدَى وَ التُّقَى وَ الْعَفَافَ وَالْغِنَى
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল হুদা ওয়াত্তুক্বা ওয়াল আফাফা ওয়াল গিনা।
- اَللَّهُمَّ اَنْتَ رَبِّىْ لَا اِلَهَ اِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِى وَ أَنَا عَبْدُكَ وَ أَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَ وَعْدِكَ مَااسْتَطَعْتُ - أَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ - أَبُوْءُلَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَىَّ و أَبُوْءُ بِذَنْبِىْ فَاغْفِرْلِىْ - فَاِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ اِلَّا أَنْتَ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আংতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আংতা খালাক্বতানি, ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহদিকা ওয়া ওয়া’দিকা মাস্তাত্বাতু। আউজুবিকা মিন শার্রি মা ছানা’তু। আবুউলাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়্যা, ওয়া আবুউ বিজাম্বি ফাগফিরলি। ফাইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আংতা।
سُبْحَانَ الله - اَلْحَمْدُ لِلَّهِ - اَللهُ اَكْبَرُ - لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ - لَهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ وَ هُوَ عَلَى كُلِّ سَيْئٍ قَدِيْرٌ
উচ্চারণ: সুবহানাল্লাহ (৩৩ বার), আলহামদুলিল্লাহ (৩৩ বার), আল্লাহু আকবার (৩৩ বার/৩৪ বার), লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির (১ বার)
سُبْحَانَ اللهِ وَ بِحَمْدِهِ - سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيْمِ
উচ্চারণ: সুবহানিাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি; সুবহানাল্লাহিল আজিম।
يَا حَىُّ يَا قَيُّوُمُ بِرَحْمَتِكَ اَسْتَغَيْثُ
উচ্চারণ: ইয়া হাইয়্যু, ইয়া কায়্যুমু বিরাহমাতিকা আসতাগিছ।
لَا اِلَهَ اِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ اِنِّىْ كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِيْنَ
উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জ্বালিমিন।
পরদিন রোজা রাখা
নিসফা শাবানের রাতের পরের দিন রোজা রাখা। হাদিসে এসেছে-
হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যখন শাবান মাসের ১৫তম রাত তোমাদের সামনে এসে যায়; তখন তোমরা সে রাতে নামাজ পড় এবং পরবর্তী দিনে রোজা রাখ। (ইবনে মাজাহ)
এ ছাড়াও নিজ ঘরে রাত জেগে নফল নামাজ, জিকির-আজকার, কুরআন তেলাওয়াত ও তাওবা-ইস্তিগফার ইত্যাদি ইবাদত বন্দেগি করা। হাদিসে এসেছে-
‘এ রাতে সূর্যাস্তের সাথে সাথে আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর আকাশে নেমে আসেন এবং ফজর পর্যন্ত মানুষকে তাঁর কাছে ক্ষমা, রোগমুক্তি, জাহান্নাম থেকে মুক্তি, রিজিকসহ ইত্যাদি বৈধ প্রয়োজনীয় চাহিদার জন্য তাঁর কাছে প্রার্থনা করতে আহ্বান করতে থাকেন।’
আবার একা কবর জিয়ারত করা যেতে পারে। কেননা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাউকে না জানিয়ে একা জান্নাতুল বাকিতে গিয়ে কবর জিয়ারাত করেছিলেন। এমনকি যা তিনি হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকেও জানাননি।
অন্যান্য আমল-
১. এ রাতের নফল নামাজের কেরাত এবং সেজদা হবে দীর্ঘ
২. কুরআনুল কারিম তেলাওয়াত করা
৩. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরূদ পাঠ করা
৪. গোনাহের কথা স্মরণ করে ইস্তিগফার তথা ক্ষমা প্রার্থনা করা
৫. নিজের জীবনের কবিরা তথা বড় গোনাহের কথা স্মরণ করে তাওবাহ করা
৬. আল্লাহর রহমত ও কল্যাণ কামনা করা
৭. রাতের কিছু সময় ঘুমানো
৮. শেষ রাতে সাহরি খাওয়া
৯. পর দিন রোজা রাখা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে এ রাত ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে পার করার তাওফিক দান করুন। সারাবছর এ আমল অব্যাহত রাখার তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহর ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
বাংলাদেশ গ্লোবাল/এইচএমন, ‘শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে মহান আল্লাহ দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন। সেই রাতে তিনি মুশরিক এবং অন্য ভাইয়ের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন।’ (মুসনাদে বাজজার: ৮০, মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৬৬৪৬)
এই রাত ফজিলতপূর্ণ হলেও এতে নির্দিষ্ট কোনো ইবাদত ও আমল নেই। তবে বিশেষ কিছু আমল করা যায়। আর বিশুদ্ধ মতানুসারে শবেবরাত ও শবেকদরের নফল আমলগুলো একাকী করণীয়। ফরজ নামাজ অবশ্যই মসজিদে জামাতের সঙ্গে আদায় করতে হবে। এরপর যা কিছু নফল পড়ার, তা নিজ নিজ ঘরে একাকী পড়বে। বিভিন্ন হাদিস থেকে এ রাতে দীর্ঘ নামাজ পড়া, সিজদা দীর্ঘ হওয়া, দোয়া-ইস্তিগফার করার সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। (শুয়াবুল ঈমান, বায়হাকি : ৩/৩৮২, ৩৮৩)
জামাতের সঙ্গে নামাজ
এশা ও ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা।
নফল নামাজ
দীর্ঘ সেজদায় দীর্ঘ নফল নামাজ পড়া। দুই রাকাত করে যত রাকাত সম্ভব এবং যে সুরা দিয়ে সম্ভব পড়তে থাকা। নির্দিষ্ট সুরা ও নির্ধারিত রাকাতসংখ্যার কোনো নিয়ম নেই। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘এ রাতে রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজে দীর্ঘ সময় ধরে সেজদাবনত অবস্থায় পড়ে থাকতেন।’ (শুয়াবুল ঈমান, বায়হাকি, হাদিস : ৩৫৫৪, তুহফাতুল আহওয়াজি : ৩/৩৬৭)
সালাতুল হাজত
সালাতুল হাজত পড়া।
সালাতুত তাসবিহ
সালাতুত তাসবিহ পড়া। এটি চার রাকাতবিশিষ্ট নফল নামাজ। প্রতি রাকাতে ‘সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার’ ৭৫ বার করে চার রাকাতে মোট ৩০০ বার পড়া। হাদিসে আছে, ‘মহান আল্লাহ এ নামাজ আদায়কারীর প্রথম-শেষ, অতীত-বর্তমান, ইচ্ছাকৃত-অনিচ্ছাকৃত, ছোট-বড় এবং প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সব (সগিরা) গুনাহ ক্ষমা করে দেন।’ (আবুদাউদ, হাদিস : ১২৯৭, রদ্দুল মুহতার : ২/২৭)
কোরআন তেলাওয়াত, জিকির
বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত, দরুদ শরিফ পাঠ, জিকির-আজকারে মশগুল থাকা।
তওবা
তাওবা-ইস্তিগফার করা, সব মুমিন মুসলমানের ইহকালীন-পরকালীন কল্যাণ ও ক্ষমার জন্য প্রার্থনা করা এবং দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে কান্নাকাটি করে রাত কাটিয়ে দেওয়া। রাসুল (সা.) বলেন, ‘কাঁদো! যদি কাঁদতে না পারো, তাহলে কাঁদার ভান করো।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪১৯৬)
তাহাজ্জুদ নামাজ
তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া। এশার নামাজের পর থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত নফল নামাজ আদায় করা হয়। এটাকে ‘সালাতুল লাইল’ বা তাহাজ্জুদ নামাজ বলে। তাহাজ্জুদ শেষ রাতে পড়া উত্তম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ফরজ নামাজের পর সবচেয়ে উত্কৃষ্ট নামাজ হচ্ছে রাতের তাহাজ্জুদ নামাজ।’ (মুসলিম, হাদিস : ১১৬৩, ফাতাওয়া দারুল উলুম : ৪/২২৩, ২২৭)
কবর জিয়ারত
মৃত আত্মীয়-স্বজন ও মুসলিম নর-নারীর কবর জিয়ারত করা এবং তাদের মাগফিরাত কামনা করা। এ রাতে রাসুল (সা.) একবার মদিনার প্রাচীন কবরস্থান ‘জান্নাতুল বাকি’তে একাকী গিয়েছিলেন; কোনো সাহাবিকে সঙ্গে নিয়ে যাননি। তাঁর অনুকরণার্থে জরুরি মনে না করে একাকী কবরস্থানে যাওয়া যাবে। তবে এ আমলকে আবশ্যকীয় মনে করা যাবে না। আর মাঝেমধ্যে ছেড়েও দিতে হবে। (ইসলাহি খুতুবাত : ৪/২৫৯-২৬০)
রোজা
শবেবরাতের পরের দিন রোজা রাখা। এটি মুস্তাহাব আমল। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা অর্ধ শাবানের রজনী ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং দিনের বেলা রোজা রাখো।’ তা ছাড়া শাবান মাসে বেশি বেশি রোজা রাখার কথা সহিহ হাদিসে এসেছে এবং ওই দিন ‘আইয়ামে বিজ’ (চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ)-এর অন্তর্ভুক্ত। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৩৮৮, লাতায়িফুল মাআরিফ : ১/১৫১-১৫৭)
বাংলাদেশ গ্লোবাল/এইচএম
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com