ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পদবি নিয়ে মন্তব্যের দায়ে আদালতে দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত ভারতীয় কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী তার আইনসভার পদ হারানোরও ঝুঁকিতে রয়েছেন।
কেবল তাই নয়, সাজার ওই রায় উচ্চ আদালতে স্থগিত বা বাতিল না হলে আগামী নির্বাচনেও অংশ নিতে পারবেন না কেরালার ওয়েনাদ থেকে নির্বাচিত এই এমপি।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে কর্ণাটকের কোলারে এক জনসভায় পলাতক ব্যবসায়ী নীরব মোদী ও ললিত মোদীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পদবির মিল নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন; বলেছিলেন, “সব চোরের পদবি মোদী হয় কী করে?”
ওই মন্তব্যের জেরে বিজেপি বিধায়ক ও গুজরাটের সাবেক মন্ত্রী পুর্নেশ মোদী কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করে দেন। আর সেই মামলায় বৃহস্পতিবার রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে গুজরাটের সুরাটের একটি আদালত।
সাজা হলেও রাহুল জামিন পেয়েছেন, তাকে আপিল করার সুযোগ দিতে ৩০ দিনের জন্য দণ্ড স্থগিত রাখা হয়েছে।
ক্ষমতাসীন বিজেপির দাবি, নিম্ন আদালত যেহেতু রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করেছে, সেহেতু লোকসভায় তার সদস্য পদ সঙ্গে সঙ্গে খারিজ হয়ে যাবে।
অন্যদিকে কংগ্রেস সমর্থক আইনজীবীদের ভাষ্য, আদালত সাজা ঘোষণার পাশাপাশি আপিলের সুযোগ দিতে দণ্ড স্থগিতও রেখেছে। ফলে সাজা এখনই কার্যকর হচ্ছে না। ফলে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত লোকসভায় রাহুলের পদ বাতিল হওয়ার কোনো কারণ নেই।
ভারতীয় জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের (১৯৫১) ৮ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কোনো আইনপ্রণেতা যদি যে কোনো অপরাধে অন্যূন দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন, তাহলে তিনি পার্লামেন্টে সদস্য থাকার অযোগ্য হবেন।
এই নিয়মে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একজন এমপির পদ খারিজ হয়ে যাবে। তবে তাকে পার্লামেন্টে সদস্য থাকার অযোগ্য ঘোষণা করে একটি আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপন জারি করবে লোকসভার সচিবালয়।
বৃহস্পতিবারের রায় ২০২৪ সালের নির্বাচনে রাহুল গান্ধীর অংশগ্রহণের বিষয়টিকেও ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে।
ভারতীয় আইন বলছে, আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে একজন আইনপ্রণেতা তার সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরের ছয় বছর পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য হবেন।
রাহুলের জন্য ভোটের দরজা খুলতে পারে, যদি উচ্চ আদালত তার সাজার রায় স্থগিত বা বাতিল করে দেয়।
লোকসভার সদস্য পদ খারিজ হওয়া এড়াতে রাহুল গান্ধীকে এখন হাই কোর্টের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। হাই কোর্ট যদি নিম্ন আদালতের রায় স্থগিত বা বাতিল করে দেয়, তাহলে আপাতত তার ফাঁড়া কাটবে বলে আইনজীবীদের ভাষ্য।
তবে ভারতীয় গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে সেজন্য কোনো সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। পার্লামেন্ট সচিবালয় সদস্যপদ খারিজ করে দেওয়ার পরও আদালতের রায়ে তিনি পদ ফিরে পেতে পারেন।
আবার উচ্চ আদালতে আপিল চলাকালে জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হলেও রাহুল যদি খালাস না পান, কিংবা নিম্ন আদালতের রায় যদি স্থগিত করা না হয়, তাহলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিক্রম হেগড়ে বলছেন, যে আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছে সেই আদালত রাহুলকে সাজা স্থগিত রেখে আপিল করার সুযোগ দিয়েছে। এখন যত দ্রুত সম্ভব তাকে রায় স্থগিতের আদেশ আনতে হবে উচ্চ আদালত থেকে। পার্লামেন্টের পদ বাঁচানোর আপতত এই একটাই উপায়।
বাংলাদেশ গ্লোবাল/এইচএম
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com