ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: কেবল সরকারের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়, এর জন্য দরকার সব রাজনৈতিক দলের সদিচ্ছা। এমনটি জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেনের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
মার্কিন নতুন ভিসা নীতি নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা করেছে তাদের নিয়মে। আমরা মনে করি এই নীতি যদি স্বচ্ছ এবং নির্বাচনে সাহায্য করে তাহলে ভালো।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি জ্বালাও-পোড়াও কমাতে সহায়তা করতে পারে।
আর মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, ‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। মাঝে মাঝেই যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়, এটি তারই অংশ। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আর বাংলাদেশের সরকার, প্রধানমন্ত্রী ও জনগণকে সহায়তা করার জন্যই এ ভিসা নীতি।’
নতুন ভিসা নীতি প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি নিয়েও কথা বলেছি, যেটি গতকাল যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আমরা নতুন ভিসা নীতি করেছি। বাংলাদেশের মানুষ, সরকার, প্রধানমন্ত্রী এবং সবার জন্য এটি সহায়ক হবে। গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার জন্য নতুন ভিসা নীতি সহায়ক হবে।’
এর আগে দুপুরে মার্কিন নতুন ভিসানীতি নিয়ে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রতিনিধিদের সঙ্গে দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত। বৈঠকে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির দুজন করে প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে অন্যদের মধ্যে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের পলিটিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কাউন্সিলর স্কট ব্র্যান্ডন, পলিটিক্যাল অফিসার ম্যাথিউ বে উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার (২৪ মে) মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে মাথাব্যথা নেই যুক্তরাষ্ট্রের। একই সঙ্গে বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সরকারের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তায় নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করল যুক্তরাষ্ট্র। এ নীতি অনুযায়ী ভোট বানচালের ষড়যন্ত্র করলে তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের ভিসা দেবে না দেশটি।
প্রতিদিনই কোনো একটি জরুরি বিষয় নিয়ে বক্তব্য শুরু করেন সংস্থাটির মুখপাত্র। বুধবার দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের বক্তব্যে স্থান পায় বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। এ সময় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের একটি লিখিত বিবৃতি পড়ে শোনান তিনি। বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সরকারের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তার অংশ হিসেবে একটি নতুন ভিসা নীতির ঘোষণা দেন তিনি। বিরোধী দল কোনো সহিংসতা করলে এ নীতির আওতায় তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার ইঙ্গিত দেয়া হয়।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনে বাধা দিতে কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায় এমন কাউকে নতুন এ পলিসি অনুযায়ী ভিসা দেয়া হবে না বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার।
তিনি আরও বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব জনগণ, রাজনৈতিক দল, সরকার, আইনশৃঙ্ক্ষলা রক্ষা বাহিনী, গণমাধ্যমসহ সবার।
নতুন এ ভিসা পলিসি কোনো নিষেধাজ্ঞা কি না- সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, এটি কেবলই একটি ভিসা পলিসি, কোনো নিষেধাজ্ঞা নয়। নির্বাচন বানচাল কিংবা সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে বাধা সৃষ্টিকারীদের ভিসা না দিতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রশাসন বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে আছে এমনটা নিশ্চিত করতেই এই ভিসা পলিসি দেয়া হয়েছে।
ব্রিফিংয়ের এক পর্যায়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক সহকারী প্রেস সচিব মুশফিকুল ফজলের উদ্দেশ্যমূলক এক প্রশ্নে মার্কিন মুখপাত্র যে উত্তর দেন তাতে এটা স্পষ্ট হয় যে, বাংলাদেশের বিরোধী দলের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো চিন্তাভাবনা নেই।
বাংলাদেশ গ্লোবাল/এইচএম
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com