ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে রয়েছে সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ডিগ্রি করার অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি এখন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ভেবে দেখতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) দিনব্যাপী এডুকেশন এক্সপোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন।
এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইরাব) এই শিক্ষামেলার আয়োজন করেছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘দেশে অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। আমি সবগুলো নিয়ে বলছি না। অনেকগুলো নিয়ে অনেক কথা আছে। কিন্তু মানের দিক থেকে অনেক ভালো করছে এরকম ৫, ৬, ৭ কিংবা তার অধিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তাদের সক্ষমতা হয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি, তাদের পিএইচডি ডিগ্রি দেয়ার অনুমতির বিষয়টি এখন ইউজিসির ভেবে দেখার সঠিক সময়। তা না হলে আমরা গবেষণাকে উৎসাহিত করতে পারব না। কাজেই এটি করা খুব দরকার।’
ইরাব সভাপতি মীর মোহাম্মদ জসিমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসাইনের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান।
শিক্ষামন্ত্রী বক্তব্যের শুরুতে এডুকেশন এক্সপো-২০২৩ এর জন্য ইরাবের প্রতি ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রধান হাতিয়ার শিক্ষা। তাই আমাদের মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে আমাদের গবেষণাসহ সব খাতে জোর দিতে হবে।
‘শিক্ষার উন্নয়নের জন্য শুধু অবকাঠামো বা বিল্ডিং বানালেই হবে না, একাডেমিক কার্যক্রমের গতি বাড়াতে হবে’ এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমাদের একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান করতে হবে। একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান ঠিক করে দেবে শিক্ষার মান কেমন হবে। একইসঙ্গে আমাদের বাড়াতে হবে গবেষণার সংস্কৃতি।’
সরকার দেশের শিক্ষাখাতে প্রতিবছরই বরাদ্দ বাড়াচ্ছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘জিডিপির হিসেবে এ হার কম হলেও সামগ্রিক হিসাবে এটি বাড়ছে। এখন আমাদের গবেষণায়ও বরাদ্দ বেড়েছে।’
তিনি শিক্ষার্থীদের ভালো মানুষ হয়ে ওঠার আহ্বান জানিয়ে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিবেদন করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের কর্মজগতে প্রবেশের জন্য নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে ডা. দীপু মনি বলেন, ‘বাংলা, ইংরেজির পাশাপাশি ভাষাজ্ঞান, সফটস্কিল, সমস্যা সমাধান দক্ষতা, যোগাযোগ দক্ষতাসহ সবখাতেই আমাদের তরুণদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। নিয়োগকর্তা এবং প্রার্থীর দক্ষতার সমন্বয় করতে হবে। তাহলে কর্মজগতে আমাদের তরুণরা পিছিয়ে থাকবে না।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শুধু চাকরি খুঁজলে হবে না—তরুণদের দক্ষতাও বাড়াতে হবে। সেজন্য আগামী প্রজন্মকে আমরা প্রাথমিক-মাধ্যমিক থেকেই দক্ষ করে গড়ে তুলতে কাজ করছি।’
এর সুফল এখন না পাওয়া গেলেও ২০৪১ সালের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করতে ২০২৫ সালের মতো সময় লাগবে। এর সুফল তার পরবর্তী সাত অথবা আট বছর পর পাওয়া যাবে এবং সেজন্য আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। দেশের উচ্চশিক্ষায় ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে একাডেমিয়ার সমন্বয় করতে।’
এসময় এডুকেশন এক্সপোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী। পরে মেলার স্টলগুলো ঘুরে দেখেন তিনি। এসময় মেলার অন্য অতিথিরাও তার সঙ্গে মেলা ঘুরে দেখেন।
প্রসঙ্গত, মেলায় ৬০টির বেশি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের গবেষণা, প্রকাশনা ও উদ্ভাবন নিয়ে হাজির হয়েছে। সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া মেলা রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে, যা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
বাংলাদেশ গ্লোবাল/এইচএম
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com