ঢাকা      রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
শিরোনাম

সহপাঠী ও প্রক্টরকে দায়ী করে আত্মহত্যা করলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী

IMG
16 March 2024, 12:05 AM

ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা। আত্মহত্যা চেষ্টার পূর্বে ফেসবুকে দেওয়া দীর্ঘ এক পোস্টে তিনি এ ঘটনার জন্য আম্মান সিদ্দিকী নামে তার এক সহপাঠীকে দায়ী করেছেন। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে আম্মান সিদ্দিকীর সহযোগী উল্লেখ করে এ ঘটনার জন্য দায়ী করেন তিনি।

আজ শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে কুমিল্লার নিজ বাসায় গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ফাইরুজ অবন্তিকা। পরে তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, তিনি মারা গেছেন।

অবন্তিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী ছিলেন। ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, "আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই, তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী। আর তার সহকারী হিসেবে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই, তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী, আর তার সহকারী হিসেবে তার সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। আম্মান যে আমাকে অফলাইন অনলাইনে থ্রেটের উপর রাখতো, সে বিষয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেও আমার লাভ হয় নাই। দ্বীন ইসলাম আমাকে নানাভাবে ভয় দেখায় আম্মানের হয়ে যে আমাকে বহিষ্কার করা ওনার জন্য হাতের ময়লার মতো ব্যাপার। আমি জানি এখানে কোনো জাস্টিস পাবো না। কারণ দ্বীন ইসলামের অনেক চামচা ওর পাশে গিয়ে দাঁড়াবে। এই লোককে আমি চিনতাম ও না। আম্মান আমাকে সেক্সুয়ালি এবিউজিভ কমেন্ট করায় আমি তার প্রতিবাদ করলে আমাকে দেখে নেয়ার জন্য দ্বীন ইসলামের শরণাপন্ন করায়। আর দ্বীন ইসলাম আমাকে তখন প্রক্টর অফিসে একা ডেকে নারী জাতিয় গালিগালাজ করে। সেটা অনেক আগের ঘটনা হলেও সে এখনো আমাকে নানাভাবে মানহানি করতেসে বিভিন্নজনের কাছে বিভিন্ন কথা বলে। আর এই লোক কুমিল্লার হয়ে কুমিল্লার ছাত্র কল্যাণের তার ছেলেমেয়ের বয়সী স্টুডেন্টদের মাঝে কী পরিমাণ প্যাঁচ ইচ্ছা করে লাগায়, সেটা কুমিল্লার কারো সৎ সাহস থাকলে সে স্বীকার করবে। এই লোক আমাকে আম্মানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৭ বার প্রক্টর অফিসে ডাকায় নিয়ে "খানকি তুই এই ছেলেরে থাপড়াবি বলস কেনো? তোরে যদি এখন আমার জুতা দিয়ে মারতে মারতে তোর ছাল তুলি তোরে এখন কে বাঁচাবে? "

ফেসবুক পোস্টে তিনি আরও বলেন, 'আফসোস এই লোক নাকি ঢাবির খুব প্রমিনেন্ট ছাত্রনেতা ছিলো। একবার জেল খেটেও সে এখন জগন্নাথের প্রক্টর। সো ওর পলিটিকাল আর নষ্টামির হাত অনেক লম্বা না হলেও এতো কুকীর্তির পরও এভাবে বহাল তবিয়তো থাকে না এমন পোস্টে। কোথায় এই লোকের কাজ ছিল, গার্ডিয়ান হওয়া আর সে কিনা শেষমেশ আমার জীবনটারেই শেষ না হওয়া পর্যন্ত মুক্তি দিলো না। আমি উপাচার্য সাদেকা হালিম ম্যামের কাছে আপনি এই প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক হিসেবে আপনার কাছে বিচার চাইলাম। আর আমি ফাঁসি দিয়ে মরতেসি। আমার উপর দিয়ে কী গেলে আমার মতো নিজেকে এতো ভালোবাসে যে মানুষ, সে মানুষ এমন কাজ করতে পারে। আমি জানি এটা কোনো সলিউশন না কিন্তু আমাকে বাঁচতে দিতেসে না, বিশ্বাস করেন। আমি ফাইটার মানুষ। আমি বাঁচতে চাইসিলাম! আর পোস্ট মর্টেম করে আমার পরিবারকে ঝামেলায় ফেলবেন না। এমনিতেই বাবা এক বছর হয় নাই; মারা গেছেন আমার মা একা। ওনাকে বিব্রত করবেন না। এটা সুইসাইড না; এটা মার্ডার। টেকনিক্যালি মার্ডার। আর আম্মান নামক আমার ক্লাসমেট ইভটিজার টা আমাকে এটাই বলছিল যে, আমার জীবনের এমন অবস্থা করবে যাতে আমি মরা ছাড়া কোনো গতি না পাই। তাও আমি ফাইট করার চেষ্টা করসি। এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে সহ্য ক্ষমতার।"

এ বিষয়ে আম্মান সিদ্দিকী বলেন, 'আমি দীর্ঘদিন ধরে উনার সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ করিনি৷ এমনকি ফেসবুক, মেসেঞ্জার বা কোন জায়গাতেই কানেক্টেড না আমি। আমাকে দোষী প্রমাণের জন্য এভিডেন্স লাগবে। এভিডেন্স ছাড়া এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন।'

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন