ঢাকা      সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
শিরোনাম

ঝিনাইদহ-১ আসনের এমপি আব্দুল হাই আর নেই

IMG
16 March 2024, 9:47 AM

নিউজ ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার (১৬ মার্চ) ভোরে থাইল্যান্ডের বামরুনদগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। থাইল্যান্ডে অবস্থান করা তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী শহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ১ মেয়ে ও ২ ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

১৯৫২ সালের পহেলা মে শৈলকুপা উপজেলার মহম্মদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ কনেন আব্দুল হাই। বাবা ফয়জুদ্দিন মোল্লা ও মা ছকিরন নেছা দম্পতির ৩ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট। তাঁর শিক্ষা জীবন শুরু হয় পার্শ্ববর্তী মির্জাপুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে পাস করার পর ভর্তি হন বসন্তপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। মাধ্যমিক শেষে ভর্তি হন ঝিনাইদহ কেশব চন্দ্র কলেজে। সেখান থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে বিএ পাস করেন তিনি।

বসন্তপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৬৮ সালে তৎকালীন মহকুমা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পান তিনি। বিপদে-আপদে ছুটে যান কর্মীদের পাশে। সেই থেকে তাঁর জনপ্রিয়তা শুরু। ১৯৬৯ সালে সরকারি কেসি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। একই বছর তিনি বৃহত্তর যশোর জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি নির্বাচিত হন।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। সেখানেও তিনি নেতৃত্বের স্বাক্ষর রাখেন। স্বাধীনতা বিরোধীদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে জীবন বাজি রেখে তিনিই ঝিনাইদহে স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা উত্তোলন করেন। দেশ স্বাধীনের পর তিনি ঝিনাইদহ যুবলীগের আহ্বায়ক ও ১৯৭৩ সালে যুবলীগের মহকুমা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আশির দশকে জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন তিনি। পরে ১৯৮৭ সালে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং পরবর্তীতে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৯৬ সালে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৯৮ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঝিনাইদহ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসে। সেই নির্বাচনে সারাদেশে মাত্র ৫৮টি আসনে বিজয় লাভ করে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আসন ছিল বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইয়ের শৈলকুপা আসন।

স্বাধীনতার টানা ৩০ বছর পর তিনি বিএনপির হাত থেকে শৈলকুপা আসনটি উদ্ধার করে আওয়ামী লীগের দখলে নেন। ২০০১ সালে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। ২০০৫ সালে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন আব্দুল হাই। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবেনসংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৫ সালের কাউন্সিলে দ্বিতীয়বারের মতো ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে একাদশ সংসদ নির্বাচনেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২০২২ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তৃতীয়বারের মতো জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। সবশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন তিনি।

আব্দুল হাইয়ের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জেলা আওয়ামী লীগসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ। তাঁর নাৃাজে জানাজা ও দাফনের বিষয়টি পরিবার থেকে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন