ঢাকা      বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
শিরোনাম

নারী হাজতিকে নির্যাতনের অভিযোগ, ২ কারারক্ষী বদলি

IMG
19 April 2024, 2:37 PM

এসআই মিলন, গাইবান্ধা: গাইবান্ধা জেলা কারাগারে এক নারী হাজতিকে নির্যাতনের অভিযোগে প্রধান কারারক্ষীসহ দুই কারারক্ষীকে বদলি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে রংপুর বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক মো. তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে তাদের বদলি করা হয়। বদলিকৃতরা হলেন জেলা কারাগারের প্রধান কারারক্ষী মো. আশরাফুল ইসলাম ও কারারক্ষী সাবানা বেগম। আশরাফুল ইসলামকে দিনাজপুর জেলা কারাগারে ও সাবানা বেগমকে ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারে বদলি করা হয়েছে এবং বদলিকৃত কারাগারে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার নারী হাজতি মোর্শেদা খাতুন সীমা। তিনি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার চৌপুকুরিয়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে। তিনি গোবিন্দগঞ্জ থানার মাদক মামলার আসামি। সীমা প্রায় পাঁচ বছর ধরে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে বন্দি। গত মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরে হাজতি সীমার উন্নত চিকিৎসা ও নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীর মা করিমন নেছা।

অভিযুক্তরা হলেন- গাইবান্ধা জেলা কারাগারের প্রধান কারারক্ষী (সুবেদার) আশরাফুল ইসলাম, নারী কয়েদি মেঘলা খাতুন, রেহেনা ও আলেফা, কারারক্ষী তহমিনা ও সাবানা, সিআইডি আনিছ ও হাবিলদার মোস্তফা। লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, হাজতি মোর্শেদা খাতুন সীমা একটি মামলায় (হাজতি নং-৫০৮) প্রায় ৫ বছর ধরে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে বন্দি। কিছুদিন আগে কারাগারে কর্মরত সুবেদার আশরাফুল ইসলাম ও নারী কয়েদি (রাইটার) মেঘলা খাতুনের মধ্যে চলমান অবৈধ কার্যকলাপ দেখে ফেলেন নারী হাজতি সীমা।

বিষয়টি জানতে পেরে সুবেদার আশরাফুল ও নারী কয়েদি মেঘলা খাতুন সীমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। ঘটনা জানাজানির ভয়ে তারা কারাগারের ভেতরে সীমাকে বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন। হাজতি সীমা এসব ঘটনা জানিয়ে জেল সুপারের কাছে বিচার দেবেন জানালে সুবেদার আশরাফুল তাকে ভয়-ভীতি ও হুমকি দেন।

এক পর্যায়ে গত ২০ মার্চ দুপুরে সুবেদার আশরাফুলের নেতৃত্বে নারী কয়েদি মেঘলা খাতুন, কারারক্ষি সাবানা বেগমসহ কয়েকজন তাকে শারীরিক নির্যাতন করেন। পরে সেলের ভেতরে নিয়ে সীমাকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে রশি দিয়ে দুই পা বেঁধে আবারও মারধর করা হয়। উপরন্তু নির্যাতনের এসব ঘটনা বাইরে প্রকাশ করলে সীমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়েছিল।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, করিমন নেছা একাধিকবার তার মেয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলেও সে সুযোগ দেয়া হয়নি। অবশেষে হাজিরার তারিখে আদালতে মেয়ের সাক্ষাৎ পান মা করিমন নেছা। এদিন সীমা মায়ের কাছে নির্যাতনের ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দেন এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন দেখান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলাম বলেন, মোর্শেদা খাতুন সীমা একজন উগ্রপন্থী কয়েদি। বিভিন্ন সময়ে তিনি বন্দি কয়েদিদের নানাভাবে নির্যাতন করে কারাগারে প্রভাব বিস্তার করে চলেন। প্রতিবাদ করায় এর আগেও তিনি বিভিন্ন কয়েদি ও কারারক্ষীকে মারপিট পর্যন্ত করেছেন। এসব ঘটনায় এর আগেও তাকে দু’বার অন্য কারাগারে বদলি করা হয়েছিল।

ঘটনার দিন তিনি তার থাকার কক্ষের কাপড় রাখার জন্য অতিরিক্ত একটি র‌্যাক দখল করে। সেটি খালি করতে বললে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে দুই মহিলা কারারক্ষীকে মারপিট করেন। পরে অন্য হাজতিদের সহযোগিতায় ওই দুই কারারক্ষীকে উদ্ধার করা হয়। কারারক্ষীদের করা মারপিটের ঘটনা থেকে নিজেকে বাঁচাতে তিনি বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য দিয়ে অভিযোগ করেছেন।

কারারক্ষিদের বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করে গাইবান্ধা জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. জাবেদ মেহেদী বলেন, কারাগারে এ ধরণের ঘটনা ঘটার কোন সুযোগ নেই। যেহেতু অভিযোগ উঠেছে, তাই আমারা তাদের বদলি করেছি।

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

এ বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন