ঢাকা      রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
শিরোনাম

আফগান নারীদের হিজাব পরার ব্যাপারে তালেবানের বাধ্যবাধকতা শিথিল করা হয়েছে: জাতিসংঘ

IMG
03 May 2024, 7:23 AM

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: জাতিসংঘের একটি নতুন প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার এমন আভাস দেয়া হয়েছে যে, আফগানিস্তানের কট্টরপন্থি তালেবান সরকার নারীদের হিজাব পরা বাস্তবায়ন করতে তাদের অভিযান শিথিল করেছে। তবে আফগানিস্তানে জাতিসংঘের সহযোগিতা মিশন বা ইউএনএমএ তার ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে বলেছে যে, তালেবান শাসনামলে ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লংঘন চলছে।

তালেবান নির্দেশ দিয়েছে যে আফগান নারীরা, যাকে তারা “ শারিয়া হিজাব”বলছে বাধ্যতামূলকভাবে পরিধান করে তাদের পুরো মুখ ঢেকে জনসম্মুখে বেরোতে পারবে। তাদের শুধু দু'টি চোখ খোলা থাকবে। ন্যায়নীতি প্রচার এবং নষ্টামি প্রতিরোধ মন্ত্রণালয়ের গ্রুপ এই পোশাক বিধি প্রয়োগ করতে তৎপরতা চালিয়ে থাকে।

ইউএনএমএ যদিও তালেবানের মন্ত্রণালয় থেকে হিজাব পরার নির্দেশের জোর পূর্বক প্রয়োগ সম্পর্কে খবর পাওয়া অব্যাহত রেখেছে। সাম্প্রতিক এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে “২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের পর থেকে ব্যাপকভাবে জোর করে হিজাব আইন প্রয়োগের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর ও ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জোর করে হিজাব পরানোর ঘটনা প্রায়শই ঘটছিল।

১১ জানুয়ারি ইউএনএমএ সতর্ক করে দেয় যে, আফগানিস্তান জুড়ে নারী ও মেয়েদের কয়েকজনকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে আটক রাখা হয় এবং অন্যান্যদের উপর হিজাব মান্য না করার অভিযোগে নিপীড়ন চালানো হয়। সেই সময় তালেবান কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘের উদ্বেগকে “ভুল” এবং “অপপ্রচার” বলে নাকচ করে দেয়।

ইউএনএমএ’র বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে ষষ্ঠ শ্রেণীর উপরে ছাত্রীদের শিক্ষার উপর চলমান নিষেধাজ্ঞার কারণে আফগানিস্তানে নতুন শিক্ষা বছর শুরু হয়েছে মাধ্যামিক স্কুলে কোন ছাত্রীর উপস্থিতি ছাড়াই।

ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়, “ মিডিয়ায় প্রকাশিত তালেবানের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন শিক্ষা বছর শুরু হওয়ার একটি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণে বিশেষত নারী সাংবাদিকদের যোগ দিতে বারণ করা হয় এই বলে যে “ নারীদের জন্য যথার্থ স্থানের অভাব রয়েছে”।

ইউএনএমএ জানিয়েছে যে, সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যম কর্মীরা আফগানিস্তানে একটি চ্যালেঞ্জের পরিবেশে কাজ করে যাচ্ছেন। কারণ সংবাদ মাধ্যম তালেবানের একাধিক বিধিনিষেধের সম্মুখীন এবং কাজ করার সময়ে তাদের ইচ্ছামত গ্রেপ্তারের ঝুঁকি রয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, তালেবান কর্তৃপক্ষ তিনটি প্রকাশ্য মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেছে। ২০২১ সালের আগস্ট মাসে ক্ষমতা দখলের পর থেকে তালেবান জাতিসংঘের আহ্বান আগ্রাহ্য করে হত্যার দায়ে পাঁচজনকে প্রকাশ্যে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে।

তালেবান স্পোর্টস স্টেডিয়ামে হাজার হাজার লোকের উপস্থিতিতে শত শত নারী ও পুরুষকে প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত করেছে। এই ভুক্তভোগীদের তালেবানের আদালতগুলিতে চুরি, ডাকাতি, অবৈধ যৌন সঙ্গম এবং “নৈতিক অপরাধে” অভিযুক্ত করা হয় ।

আফগান নারীদের জাতিসংঘসহ অনেকগুলো সরকারি ও বেসরকারি চাকরিতে নিষিদ্ধ করা হয়। তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুনজাদা তার সরকারের কর্মকান্ডকে সমর্থন করে বলেন, এগুলি স্থানীয় সংস্কৃতি এবং ইসলামী আইন অনুযায়ী করা হচ্ছে। তিনি তাঁর নীতিগুলির এবং ইসলামী আইনের কট্টর ব্যাখ্যার আন্তর্জাতিক সমালোচনাকে আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে নাকচ করে দেন। মূলত আফগান নারীদের প্রতি তাদের কঠোর আচরণের কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন