আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: সহিংস বিক্ষোভের মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করতে বাধ্য হওয়ার পর শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশংসা করেছেন কংগ্রেস নেতা এবং সাংসদ শশী থারুর।
শনিবার (১০ আগস্ট) ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে শশী থারুর বলেন, প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের ক্ষমতার পরিবর্তন ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ নয়।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভারতের সাথে সম্পর্ককে কীভাবে প্রভাবিত করবে--এমন প্রশ্নের জবাবে শশী থারুর বলেন, ‘আমাদের মৌলিক স্বার্থ বাংলাদেশের সাথে ঘনিষ্ঠ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে নিহিত। আমাদের মৌলিক প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের জনগণের মঙ্গল। অর্থাৎ প্রথমে জনগণ, এরপর রাষ্ট্র এবং তৃতীয় ধাপে রয়েছে কোনও নেতার কথা।’
তিনি আরও বলেন ‘আমরা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে আছি ১৯৭১ সাল থেকেই। নানা উত্থান-পতনের মধ্যেও আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। এমনকি যখন সেখানে ভারতের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব ছিল না-এমন সরকারের সঙ্গেও সম্পর্ক বজায় রাখতে পেরেছি আমরা। অবশ্যই ভবিষ্যতেও সেই সম্পর্কের কোনও অবনতি হওয়া উচিত নয়।’
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে, তাতে ভারতের উদ্বেগের কিছু নেই বলে মনে করেন সাবেক এই কূটনীতিক।
শশী থারুর বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাপী একজন সম্মানিত ব্যক্তি। আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি। আমি মনে করি তাকে জামায়াতে ইসলামি বা পাকিস্তানি আইএসআই-এর ঘনিষ্ঠ ভাবার কোনও কারণ নেই। তবে তিনি কিছুটা ওয়াশিংটনপন্থী।’
ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় উদ্বেগ সবসময়ই ছিল পাকিস্তান ও চীন। এই অঞ্চলে তারা 'ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সহিংস বিক্ষোভের কিছু ঘটনায় পাকিস্তানি আইএসআইয়ের হাত থাকতে পারে। চীনও এই অঞ্চলে প্রভাব বাড়াতে এমন পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারে। তবে ড. ইউনূস শান্তির কথা বলেছেন, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতার আহ্বান জানিয়েছেন।’
শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘আমরা যদি শেখ হাসিনাকে সাহায্য না করতাম তাহলে এটা ভারতের জন্য কলঙ্কজনক হতো।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা কতক্ষণ ভারতে থাকতে চান তা নিয়ে আমাদের উদ্বিগ্ন না হওয়াই ভালো। আপনি অতিথিকে ডেকে এনে তিনি কখন বাড়ি ফিরবেন, তা জিজ্ঞেস করতে পারেন না।’
নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়ানোয় মোদি সরকারের প্রশংসাও করেন শশী থারুর।
সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়ে ভারত সরকারের উদ্বেগ হওয়ার কারণ আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ থেকে পরস্পরবিরোধী প্রতিবেদন আসছে। এ ধরনের দুয়েকটা ঘটনা যে ঘটছে না, তা নয়। কিন্তু সেই সঙ্গে এটাও দেখতে হবে, দাঙ্গার মধ্যেই বাংলাদেশের মুসলমানেরা হিন্দুদের বাড়ি ও মন্দির রক্ষা করছেন। এটা ভালো খবর।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণে আশার আলো দেখছেন বলেও জানিয়েছেন প্রবীণ এই কংগ্রেস নেতা।
বাংলাদেশ গ্লোবাল/এফআর
সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com