ঢাকা      মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১
শিরোনাম

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা কামনা করেছে বাংলাদেশ

IMG
09 December 2024, 11:05 AM

ঢাকা, বাংলাদেশ গ্লোবাল: বাংলাদেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনে বৈশ্বিক ঐকমত্য জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলী সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান। একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বলিষ্ঠ সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

কাতারের দোহায় শেরাটন হোটেলে চলমান দোহা ফোরামে 'ক্রসরোডে বাংলাদেশ: শাসন ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক সংস্কার এবং শেখ হাসিনা পরবর্তী গতিপথ' শীর্ষক সেশনে এসব কথা বলেন তিনি।

দোহা ফোরামের দ্বিতীয় দিনে এই সেশনের শুরুতে দোহা ফোরামের উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণের প্রেক্ষাপটে আয়োজক ও অংশগ্রহনকারীদের উদ্দেশ্যে প্রেরিত ৬ মিনিটের একটি ভিডিও মেসেজ প্রচার করা হয়। এ সেশনে কাতারের উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত প্রতিমন্ত্রী যোগদান করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান বলেন, প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে স্রেফ মানবতার কারণে শত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ গত সাত বছর ধরে আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে । বিশ্ব সম্প্রদায়ের অধিকতর সহায়তা ছাড়া বাংলাদেশের পক্ষে এটি অব্যাহত রাখা খুবই কঠিন হয়ে পড়ছে। দ্রুততার সাথে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে বৈশ্বিক ঐকমত্য গঠনে জোর দিচ্ছি। রোহিঙ্গা বিষয়ে আগামী বছর জাতিসংঘের একটি বিশেষ সম্মেলন হবে। আশা করছি, এ সম্মেলনের মাধ্যমে সকল অংশীজনের সহায়তায় রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনে সহায়ক হবে।

প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেনটেটিভ বক্তব্যে বাংলাদেশে জুলাই- আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে দমনে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকার কীভাবে নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে ও হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে গুলি করে আহত ও পঙ্গু করেছে, অন্ধ করে দিয়েছে- তা তুলে ধরেন তিনি।

বিগত এক শতাব্দী ধরে বাঙালি মুসলিম জাতিসত্তার উন্মেষের ইতিহাস পর্যালোচনা করে ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলন, পাকিস্তান আন্দোলন, ভাষা আন্দোলনসহ স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় এবং স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়ার প্রেক্ষিতে জাতি বারবার প্রতারিত হয়েছেন মর্মে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ছাত্র জনতার জুলাই- আগস্ট বৈপ্লবিক গণ-অভ্যুত্থানের ফলে বাংলাদেশের সামনে এই প্রতারণা থেকে মুক্তি এবং গণতন্ত্র ও সাম্যের ভিত্তিতে দেশ গড়ার অপার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। রাষ্ট্র ব্যবস্থার সংস্কারের মাধ্যমে সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। একজন কৃষক, শ্রমজীবী বা প্রান্তিক মানুষের সন্তান যখন দেশ পরিচালনার স্বপ্ন দেখতে পাবেন বা সে সুযোগ তৈরি হবে- তখন আমরা বলতে পারব ভাল কাজ হয়েছে, ভাল সংস্কার হয়েছে। সে লক্ষ্যেই অন্তর্বতীকালীন সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ-ভারত প্রসঙ্গও তাঁর বক্তব্যে তুলে আনেন হাই রিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিল। তিনি বলেন, আমরা প্রতিদিন সঙ্ঘবদ্ধ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অপপ্রচারের শিকার হচ্ছি। ফ্যাসিবাদ থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণের এই ঐতিহাসিক সময়ে ভারতের নিকট থেকে অধিক বেশি দায়িত্বশীল ও প্রতিবেশীসুলভ সহযোগিতা পাওয়ার প্রত্যাশা করেন তিনি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিবের আসন্ন বৈঠকে পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে সম্পর্ককে উন্নত পর্যায়ে নেয়ার সুযোগ তৈরি হবে।

এ সেশনে লন্ডনভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক জাগরণ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শরীফ বান্নার সঞ্চালনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সহসমন্বয়ক সাজিদ মাহমুদ, সোয়াস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের অধ্যাপক নাওমি হোসেন, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সিনথিয়া ফরিদ, ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড গভর্নেন্সের চেয়ারম্যান সৈয়দ মুনির খসরু প্রমুখ প্যানেল বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন। কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো: নজরুল ইসলাম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম এশিয়া অনুবিভাগের মহাপরিচালক মো: শফিকুর রহমান, দূতাবাসের কর্মকর্তাগণসহ দোহা ফোরামে অংশগ্রহনকারী ব্যক্তিবর্গ, কাতারে বাংলাদেশী প্রবাসী সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ।

বাংলাদেশ গ্লোবাল/জেএস

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন