গলায় ফাঁস দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, স্বামী আটক
কলিট তালুকদার, পাবনা: গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) এক ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় তাঁর স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে পাবনা শহরের মনসুরাবাদ আবাসিক এলাকার ৫ নম্বর রোডের গ-ব্লকের ভাড়া বাসা থেকে ওই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
তাঁর নাম সারভিন সুলতানা মীম (২৬)। তিনি পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের দশম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি মেহেরপুরের জেলার গাংনী উপজেলার সালদা গ্রামের আজিজুল ইসলামের মেয়ে।
তাঁর স্বামী আসিফ মোর্শেদ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার পূর্ব এখলাসপুরের আবদুল মালেকের ছেলে। তিনিও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও উন্নয়ন পরিকল্পনা বিভাগের দশম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তাঁদের সহপাঠীরা জানান, গত বছরের ডিসেম্বরে তাঁরা দুজন বিয়ে করেছেন।
ভাড়া বাসার মালিক জানান, প্রায় ২ মাস আগে ওই ছাত্রীর স্বামী আসিফ মোর্শেদ বাসা ভাড়া নেন। তাঁরা সেখানে সব সময় থাকতেন না। গত রাতে আসিফ বাসায় ছিলেন না, ঢাকায় ছিলেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা থেকে বাসায় ফিরে দরজা বন্ধ পান। ধাক্কাধাক্কির পরও দরজা না খুললে সবার সন্দেহ হয়। পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে মীমকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়।
আসিফ মোর্শেদ জানান, রোববার (২৩ মার্চ) বিকেল ৪টার দিকে মীমের সঙ্গে তাঁর কথা হয়। এরপর থেকে তাঁকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না। মীমের সহপাঠীরা জানান, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলের ৪০৯ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। বিয়ের পর থেকে তিনি কখনো হলে থাকতেন, কখনো স্বামীর সাথে মনসুরাবাদের ভাড়া বাসায় থাকতেন। বিয়ের পর কারো সাথে তেমন কিছু শেয়ার করতেন না। হঠাৎ করে এই ঘটনায় তারা বিস্মিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা খবর পেয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে যাই। তখন দেখি পুলিশ চলে এসেছে। এরপর ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় দরজা ভাঙলে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। নিহত ছাত্রীর বাবা-মাকে খবর দেওয়া হয়েছে। তাঁরা আসলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে ফ্ল্যাটে ঝুলন্ত অবস্থা পাই। মরদেহ ময়নাতদন্তের পাঠানো হয়েছে। কি কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
