ঢাকা      সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
শিরোনাম

গাজায় কয়েকটি 'গণহত্যা' সংঘটিত করেছে ইসরাইল: জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ

IMG
26 March 2024, 7:53 AM

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, বাংলাদেশ গ্লোবাল: জাতিসংঘের অধিকার বিষয়ক এক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, এ কথা বলার “যৌক্তিক কারণ” রয়েছে যে, ইসরাইল গাজা যুদ্ধে কয়েকটি “গণহত্যা” সংঘটিত করেছে এবং “জনজাতি নির্মূলীকরণে”র (এথনিক ক্লেনজিং) উদ্যোগ নিয়েছে। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অধিকার অবস্থা বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি ফ্রাঞ্চেস্কা আলবানিজ বলেন, স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে যে, জাতিসংঘের গণহত্যা কনভেনশনে (জেনোসাইড কনভেনশন) তালিকাবদ্ধ পাঁচটি আইনের তিনটি লঙ্ঘন করেছে ইসরাইল।

এক প্রতিবেদনে তিনি বলেন, “গাজার উপর ইসরাইলের হামলার নজিরবিহীন ধরন ও ব্যাপকতা এবং জীবনের যে ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি তারা তৈরি করেছে তা বুঝিয়ে দেয়, জাতিগোষ্ঠী হিসেবে ফিলিস্তিনিদের অস্তিত্ব লোপ করে দেওয়ার অভিপ্রায় রয়েছে তাদের।” ইসরাইল তাৎক্ষণিকভাবে এই প্রতিবেদনকে “বাস্তবতার অশ্লীল বিকার” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

আলবানিজ একজন স্বতন্ত্র বিশেষজ্ঞ। জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ তাকে নিযুক্ত করেছে। তবে তিনি জাতিসংঘের পক্ষে (বা মুখপাত্র হিসেবে) কথা বলেন না। তাঁর কথায়, তিনি “বিশ্বাস করার মতো যুক্তিগ্রাহ্য কারণ খুঁজে পেয়েছেন যে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যে ধরনের গণহত্যামূলক কার্যকলাপ চালানো হয়েছে, তা গণহত্যা নির্ধারনের মাত্রায় পৌঁছেছে।”

“অ্যানাটমি অফ এ জেনোসাইড” শীর্ষক এই প্রতিবেদনে বিভিন্ন কার্যকলাপকে তালিকাবদ্ধ করা হয়েছে এইভাবে: “কোনও গোষ্ঠীর মানুষকে হত্যা করা; গোষ্ঠীর মানুষদের শারীরিক ও মানসিকভাবে গুরুতর ক্ষতি করা; গোষ্ঠীর মানুষদের অস্তিত্ব সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে বিলুপ্ত করতে হিসেব করে তাদের জীবনের পরিস্থিতির উপর ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত হানা।”

জেনেভায় ইসরাইলের কূটনৈতিক মিশন বলেছে, “এই প্রতিবেদনকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছে” তাদের দেশ এবং একে “নির্দিষ্ট ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকে খর্ব করার উদ্দেশ্যে এক প্রচারণার সম্প্রসারিত অংশ” হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। আলবানিজের “আপত্তিকর অভিযোগগুলি”র নিন্দা করে এক বিবৃতিতে এই মিশন বলেছে, “ইসরাইলের যুদ্ধ হামাসের বিরুদ্ধে, ফিলিস্তিনের বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে নয়।”

আলবানিজ ও তাঁকে দেয়া দায়িত্বকে দীর্ঘদিন ধরে কঠোরভাবে সমালোচনা করে আসছে ইসরাইল। হামাসের গত বছরের ৭ অক্টোবরের হামলা (যা গাজায় যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটায়) ইহুদি-বিদ্বেষী ছিল না বলে মন্তব্য করায় গত মাসে আলবানিজের ভিসা নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল ইসরাইল।

আলবানিজ আজ মঙ্গলবার তাঁর প্রতিবেদন মানবাধিকার পরিষদে উপস্থাপন করবেন। এই প্রতিবেদনে তিনি বলেছেন যে, ইসরাইলের “গণহত্যামূলক কাজ” তাদের “গণহত্যামূলক অভিপ্রায়-সম্বলিত বিবৃতি”র পরেই ঘটে থাকে।

তিনি বলেন, ইসরাইলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বিবৃতিতে ফিলিস্তিনিদের জোর করে বাস্তুচ্যুত করে সেই জায়গায় ইসরাইলি বসতিস্থাপনকারীদের বসানোর অভিপ্রায় ধরা পড়েছে এবং এ থেকে ইঙ্গিত মিলছে যে, “জনজাতি নির্মূলীকরণ ঘটাতে গণহত্যার হাতিয়ার হিসেবে এলাকা খালি করার নির্দেশিকা ও নিরাপদ অঞ্চলের ধারণাকে ব্যবহার করা হয়েছে।”

এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইসরাইল সকল ফিলিস্তিনি ও তাদের অবকাঠামোকে “সন্ত্রাসী” বা “সন্ত্রাসে মদতকারী” হিসেবে বিবেচনা করে এবং এইভাবে সবকিছু ও সবাইকে হয় লক্ষ্যবস্তু নয়ত যুদ্ধজনিত ক্ষতিতে রূপান্তরিত করা হচ্ছে।

এতে বলা হয়েছে, “এইভাবে গাজার কোনও ফিলিস্তিনি সংজ্ঞা অনুসারে নিরাপদ নয়। এর ধ্বংসাত্মক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রভাব রয়েছে, যাতে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে জীবন দিতে হয়েছে।” এই প্রতিবেদনে জোর দেওয়া হয়েছে, ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরাইলের দুর্ব্যবহার ৭ অক্টোবর শুরু হয়নি।

আলবানিজ তাঁর প্রতিবেদনে বলেছেন, “গাজায় ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরাইলের গণহত্যা, তাদের অস্তিত্ব মুছে দেয়ার জন্য বসতিস্থাপনকারী-ঔপনিবেশিক দীর্ঘস্থায়ী প্রক্রিয়ার সর্বোচ্চ পর্যায়।”

সবশেষ খবর এবং আপডেট জানার জন্য চোখ রাখুন বাংলাদেশ গ্লোবাল ডট কম-এ। ব্রেকিং নিউজ এবং দিনের আলোচিত সংবাদ জানতে লগ ইন করুন: www.bangladeshglobal.com

সর্বশেষ খবর

আরো পড়ুন